ব্রিটেনের লন্ডনে বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তিসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে (ইকসিড) এমন রায় দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আজ এক ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নসরুল হামিদ বলেন, এটি ফৌজদারি অপরাধ হওয়ায় ইকসিডের এখতিয়ার নেই এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেওয়া। দেশের আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলা চলবে। দেশের আদালতে নাইকো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার হবে বলেও তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নসরুল হামিদ বলেন, ২০০৩ সালে নাইকো-বাপেক্স যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে ছাতকের টেংরাটিলায় গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কূপ খনন শুরু হলে গ্যাসক্ষেত্রটিতে মারাত্মক বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের ফলে গ্যাসক্ষেত্র ও তার আশপাশের এলাকায় পরিবেশ ও জনজীবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে ওই বছরের ২৪ জুন।
তিনি বলেন, নাইকো ২০১০ সালে ছাতক গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় তারা দায়ী নয় মর্মে ঘোষণা চেয়ে ইকসিডে একটি সালিসি মোকদ্দমা দায়ের করে। ২০১৬ সালে বাপেক্স আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করেন। এতে নাইকোর কাছে বাপেক্স ১১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশ সরকার ৮৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে ইকসিডে নালিশ করা হয়। ইকসিড ট্রাইব্যুনাল ২০০৫ সনের বিস্ফোরণের জন্য যৌথ উদ্যোগ চুক্তির অধীন শর্তসমূহ ভঙ্গের জন্য নাইকোকে দায়ী করে তাদের অভিযুক্ত করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এক যুগান্তকারী রায় দেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নাইকো দক্ষতার সঙ্গে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং পেট্রোলিয়াম শিল্পের আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে এ বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে বলে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছে। নাইকোকে অভিযুক্ত করে উক্ত ঘটনা থেকে সরাসরি উদ্ভূত যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির জন্য বাপেক্সকে ক্ষতিপূরণ দিতে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়েছে। সেসঙ্গে এ ঘটনায় ছাতক গ্যাসক্ষেত্র থেকে নির্গত গ্যাসের জন্যও বাপেক্সকে ক্ষতিপূরণ দিতে নাইকোর প্রতি ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়েছে। পরিবেশসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আদালতে উত্থাপনের র্নিদেশ দিয়েছে ইকসিড।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ বছরের ২৮ ফ্রেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি আদালত ইকসিড রায় ঘোষণা করে। এটি বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে মার্চের প্রথম দিকে। করোনা শুরু হওয়ার কারণে তখন এটি বলা হয়নি।
ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন জ্বালানি বিভাগের জৌষ্ট সচিব আনিসুর রহমান, মামলার আইনজীবি মইন গনি। এ ছাড়া পেট্রোবাংলা, বাপেক্স ও জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। ♦