বাংলাদেশের বৃহত্তম ক্ষুদ্রঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাককে জিরো-কুপন বন্ড ইস্যু করার অনুমোদন দিয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)। ফলে প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার জিরো-কুপন বন্ড ইস্যু করতে পারবে।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণের ইতিহাসে একটি বেসরকারি সংস্থার জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করার নজির এটাই প্রথম।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকালে এমআরএর নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ একটি অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের চিফ ফাইনান্সিয়াল অফিসার তুষার ভৌমিকের কাছে এই অনুমোদনপত্র হস্তান্তর করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এমআরএর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মণ চন্দ্র দেবনাথ, পরিচালক মুহাম্মদ মাজেদুল হক ও মো. নূরে আলম মেহেদিসহ ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক অসিত বরণ দাস।
এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ব্র্যাককে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করার অনুমোদন দিয়েছিল।
ব্র্যাকের এ বন্ডের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে– এটি আনসিকিউরড, নন-কনভার্টিবল ও ফুললি রিডিমেবল। এর মেয়াদ হবে দেড় থেকে পাঁচ বছর।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, করপোরেট ও বিত্তবানরা ১ কোটি টাকার একাধিক গুণিতক দিয়ে এ বন্ড কিনতে পারবেন।
এই ইস্যুটির লিড অ্যারেঞ্জার আরএসএ অ্যাডভাইজরি লিমিটেড। ট্রাস্টি এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড।
সব নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে ব্র্যাকের সিএফও তুষার ভৌমিক বলেন, ‘এতদিন গ্রাহকের সঞ্চয় এবং ব্যাংকের ঋণ ছিল ব্র্যাকের তহবিলের প্রধান উৎস। এখন বন্ড ইস্যু ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের তহবিলের বিকল্প উৎস হিসেবে যোগ হলো। এটি ক্ষুদ্রঋণ খাতের জন্য একটি বিরাট স্বীকৃতি।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বন্ডগুলোর মাধ্যমে ব্র্যাকের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিতে বিনিয়োগের জন্য নন-লেন্ডার প্রতিষ্ঠানগুলির পথ খুলবে। ব্র্যাক আশা করে বন্ডগুলি সাশ্রয়ী আর্থিক সমাধান খোঁজা মানুষদের, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালে ব্র্যাকের যাত্রা হয় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল শাল্লায়। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে দারিদ্র্যচক্র ভেঙে স্বাবলম্বী করতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি জরুরি- এ উপলব্ধি থেকে ব্র্যাক প্রথম ১৯৭৪ সালে শাল্লার জেলেদের ঋণ দেয়।
বর্তমানে ব্র্যাকের মাইক্রোফাইনান্স কর্মসূচির আওতায় সেবা পাচ্ছেন ৭৪ লাখ মানুষ। ♦