বাংলাদেশে কভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিষাদময় ১৫ হাজার মৃত্যু ছাড়াল দেশ। ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৮ হাজার ৬৬১ জনের দেহে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গতকাল রোববার বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দেশে এ পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৭ জনের শরীরে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৬৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৬০৩ ল্যাবে ২৯ হাজার ৮৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ২৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। সার্বিক শনাক্ত হার ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ।
গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬৯৮ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৭ জন। সুস্থতার হার ৮৮.২৫ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৯৬ জন, নারী ৫৭ জন। তাদের মধ্যে বিশোর্ধ্ব ৩, ত্রিশোর্ধ্ব ১১, চল্লিশোর্ধ্ব ২৪, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৪৫ ও ষাটোর্ধ্ব ৭০ জন।
বিভাগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এরপর ঢাকা বিভাগ, ৪৬ জন। এছাড়া রাজশাহীতে ১২, চট্টগ্রামে ১৫, বরিশালে ৩, সিলেটে ২, রংপুরে ১৫, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছর ৮ মার্চ। ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর আগে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কথা ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত বছর ৪ জানুয়ারি থেকে দেশের বিমানবন্দরসহ সব স্থল ও নৌবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু করে। ওই বছর ৪ মার্চ সমন্বিত করোনা কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়।
কভিডে বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে এ পর্যন্ত ১৮ কোটি ৪৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৯ লাখ ৮৯ হাজারের বেশি মানুষ। সুস্থ হয়েছেন ১৬ কোটি ৮৬ লাখের বেশি।
বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ জেলা করোনার ভয়াবহতার ঝুঁকিতে রয়েছে। ১৪ থেকে ২০ জুন নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় ২২ জুন থেকে ঢাকাকে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই প্রচেষ্টায় ঢাকার আশপাশের চারটি জেলাসহ মোট সাতটি জেলায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের চলাচল ও কার্যক্রম ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে এরপরও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সোমবার সকাল থেকে সারা দেশে সব গণপরিবহন ও মার্কেট-শপিং মল বন্ধ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন, বন্ধ রয়েছে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কিন্তু কমছে না সংক্রমণ।
তাই চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে করোনাসংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটি। এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলেও আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। ♦