এবি ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়বে

0

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ব্যাংকটি ৫০০ কোটি টাকার নন-কনভার্টেবল, আনসিকিউরড, ফ্লোটিং রেটেড ও পারপিচুয়াল বন্ড ছাড়বে। বন্ডটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা হবে। এ বন্ডটি টায়ার ওয়ান মূলধন বৃদ্ধির জন্য ইস্যু করা হচ্ছে।

যথাযথ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনসাপেক্ষে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।

এবি ব্যাংক লিমিটেড
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বেসরকারী ব্যাংক হিসেবে এবি ব্যাংক লিমিটেড ১৯৮১ সালের ৩১ ডিসেম্বর আত্মপ্রকাশ করে। শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লক্ষে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচিতি নিয়ে ১৯৮২ সালের ১২ এপ্রিল ব্যাংকটি তার কার্যক্রম শুরু করে ।

দেশের শীর্ষস্থানীয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে ধরে রাখার আকাঙ্খা, গ্রাহক, শেয়ারহোল্ডার ও কর্মকর্তাদের জন্য সুদূরপ্রসারী মূল্যমান তৈরি করা ব্যাংকটির লক্ষ্য।

প্রতিষ্ঠার পর কয়েক দশকে অনেক মাইলফলক অর্জন ও অসংখ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এবি সবসময় বাংলাদেশের একটি প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনী ব্যাংক হিসেবে নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছে । প্রযুক্তির জয়-জয়কারের নতুন এ যুগে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লক্ষ্যে এবি ব্যাংক সাফল্যের সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এসএমএস ব্যাংকিং, সর্বাধুনিক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, যথোপযুক্ত নেটওয়ার্ক সমাধান, ২৪/৭ এটিএম সেবা ও নানা ধরনের ই-সেবা চালু করেছে।

এবি ব্যাংক তার সেবা দেশ ও বিদেশে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করেছে।

২৫ বছর ধরে ‘আরব বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেড’ নাম ধারণ করার পর অতীতের পরিচয় পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষে একটি সচেতন উদ্যোগ হিসেবে ব্যাংকটি বেছে নেয় নতুন নাম ‘এবি ব্যাংক লিমিটেড’। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর এতে ইতিবাচক সম্মতি জ্ঞাপন করে।

ব্যাংকের নতুন লোগোটি বন্ধন ও আস্থার মিশেলকে একটি প্রতীকী রূপ দিয়েছে। লোগোটি এর দর্শন, লক্ষ্য ও অন্তঃস্থ মূল্যবোধের সমন্বয়ে সমসাময়িক চেতনায় তৈরি করা হয়েছে। নতুন লোগোটি আমাদের সংস্কৃতির ‘ শীতল পাটি ‘কে চিত্রিত করে। কারণ এটি গ্রাহকের সঙ্গে ব্যাংকের বন্ধন ও সব চাহিদা পূর্ণ করাকে প্রতিফলিত করে। তাই এবি ব্যাংকের নতুন প্রেরণা ‘বন্ধন’।

ব্যাপক বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য ও সেবার মাধ্যমে এবি ব্যাংক দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর মাঝে তার অবস্থান নিশ্চিত করেছে। কার্যত সব গ্রাহক শ্রেণিকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে এবি ব্যাংক ব্যাপক পরিসরের আমানতি ও ঋণ-সুবিধা দিচ্ছে।

স্টুডেন্ট ব্যাংকিং থেকে প্রায়োরিটি ব্যাংকিং সবই রয়েছে এবির ব্যাংকিং পণ্যের ভাণ্ডারে। ব্যাংকের পণ্যের সম্ভার খুব সমৃদ্ধ। উদ্ভাবনী পণ্য ও সেবা চালু করা হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) ঋণ, নারী উদ্যোক্তা ঋণ, ভোক্তা ঋণ, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড (স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক), এটিএম, ইন্টারনেট ও এসএমএস ব্যাংকিং, রেমিটেন্স সেবা, ট্রেজারি পণ্য ও সেবা, করপোরেট স্ট্রাকচার্ড ফাইন্যান্স, ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ ও সম্প্রসারণকরণ, বিনিয়োগ ব্যাংকিং, প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য বিশেষ পণ্য ও সেবা, প্রায়োরিটি ব্যাংকিং এবং গ্রাহক সেবাসহ সব ক্ষেত্রে।

এবি ব্যাংকের রয়েছে উন্নতমানের পণ্য ও সেবা এবং নিষ্ঠাবান রিলেশনশিপ ম্যানেজার, যারা গ্রাহকের আর্থিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখা ও অগ্রাধিকার দানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

শ্রেষ্ঠত্বের যাত্রায় এবি ব্যাংক স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রকৃত সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান।

চেয়ারম্যান
জনাব মুহাম্মদ এ. (রুমী) আলী এবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান। এবি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ২০ এপ্রিল, ২০১৯ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে জনাব মোহাম্মদ এ. (রুমী) আলীকে মনোনীত করে।

বাংলাদেশের প্রতিথযশা ব্যাংকার তিনি। জনাব রুমী আলী তার বৈচিত্র্যপূর্ণ কর্মজীবনে নানা প্রতিষ্ঠানে সিইও, বোর্ড সদস্য ও চেয়ারম্যান হিসাবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। এরপর ১৯৭৫ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক (বাংলাদেশে) কর্মজীবন শুরু করেন।

১৯৯৭ সালে তিনি এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে বাংলাদেশ অপারেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদের জন্য মনোনীত হন। ২০০০ সালে ব্যাংকটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড গ্রুপ অধিগ্রহণ করলে তিনি ব্যাংক দুটির যৌথ কার্যক্রমে প্রথম সিইও নির্বাচিত হন।

২০০২ সালের নভেম্বরে, তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসাবে যোগ দেন। তিনি দেশের ব্যাংকিংখাতের নিয়ন্ত্রন সংস্কারে নিযুক্ত ছিলেন, বিশেষ করে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও করপোরেট গভর্নেন্স নিয়ে তিনি কাজ করেন। তিনি খুব সফলভাবে চার বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।

জনাব রুমী আলী ব্র্যাকের এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান বিকাশ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ব্র্যাক ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল বোর্ডের সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

অতীতে তিনি বাংলাদেশ শ্রমিক নিরাপত্তা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ব্যাংকিং অন ভ্যালুস অ্যান্ড পারফরম্যান্স বেসড ফান্ডস ইনিশিয়েটিভ অব আইএফসি/ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ওয়াশিংটন, পিকেএসএফ, বাংলাদেশের দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০০১ সালে তিনি ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের ফেলো হন। এছাড়া তিনি প্রধান বক্তা ও প্যানেলিস্ট হিসাবে অনেক আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশ নিয়েছেন।

বর্তমানে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের সিইও হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন জনাব রুমী আলী। তিনি বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা, সহজাত দক্ষতাসম্পন্ন নেতৃত্ব শৈলী ও আর্থিক শিল্পের নেতা হিসাবে এবি ব্যাংকের অগ্রযাত্রায় নিরলস কাজ করছেন।

প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর
জনাব তারিক আফজাল ২০১৮ সালে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর – করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, আইনী ও নিয়ন্ত্রক বিষয়ক কার্যক্রমের প্রধান হিসেবে এবি ব্যাংকে যোগ দেন। ৮ জুলাই ২০১৯ তিনি প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে মনোনীত হন।

এবি ব্যাংকে যোগ দেয়ার আগে তিনি সোনালী পোলারিস ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি লিমিটেডের (সোনালী ব্যাংক ও পোলারিস, ভারতের যৌথ উদ্যোগ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন।

জনাব তারিক আফজাল অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতা বলে বৈদেশিক কর্মক্ষেত্রেও সফল ছিলেন। আশির দশকের শেষদিকে লন্ডন, কানাডার ক্রেডিট ইউনিয়ন এবং পরবর্তীকালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি ব্যাংক আলফালাহ ও ব্র্যাক ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। ডান অ্যান্ড ব্র্যাডস্ট্রীট রেটিং এজেন্সি, বাংলাদেশে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন।

নতুন ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপট তৈরি, পরিচালন কার্যকারিতার উৎকর্ষ সাধন, কর্মীদক্ষতা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সিব্ধহস্ত জনবা তারিক আফজাল।

Share.