ভারতে আগামী সপ্তাহে অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন

0

ভারতের চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি তথ্য জমা দিয়েছে অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকার স্থানীয় প্রস্তুতকারক। ফলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকা ‘এজেডডি১২২২’ অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে দুটি সূত্রের বরাতে নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ভারতে টিকাটির নাম কোভিশিল্ড।

অনুমোদন দেয়া হলে প্রথম দেশ হিসেবে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারকদের তৈরী টিকাকে সবুজ সংকেত দেবে ভারত। ব্রিটেনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনো এ টিকার পরীক্ষালব্ধ তথ্য পর্যবেক্ষণ করছে।

বিশ্বের বৃহত্তম টিকা তৈরির দেশ ভারত আগামী মাসে তার নাগরিকদের টিকাকরণ শুরু করতে চায়। দেশটি ফাইজার ইনকরপোরেটেড ও স্থানীয় সংস্থা ভারত বায়োটেকের তৈরি টিকার জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদনও বিবেচনা করছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ ভারত, যা বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক সংক্রমণ হারের দেশগুলোর একটি। সুতরাং দেশটিতে টিকাকরণ শুরু হলে তা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের টিকা নিম্ন-আয় ও উষ্ণ জলবায়ুতে অবস্থিত দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি তুলনামূলক সস্তা, পরিবহণে সহজ ও সাধারণ রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।

ভারতের সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) ৯ ডিসেম্বর তিনটি আবেদন পর্যালোচনা করেছে। এরপর অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা তৈরির প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়াসহ (এসআইআই) সব সংস্থার কাছে আরো তথ্য চেয়েছে।

সূত্র দুটি জানিয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা এসআইআই ইতোমধ্যে সব তথ্য সরবরাহ করেছে। একইসঙ্গে ফাইজারের থেকে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, একটি সূত্র জানিয়েছে যে ভারত বায়োটেক থেকে অতিরিক্ত তথ্য প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

সব সূত্র মতে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদন আসতে পারে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার শেষ-পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাদেরকে দুটি পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ছিল ৬২ শতাংশ। আর প্রথমে একটি অর্ধেক ডোজ ও পরে পূর্ণ ডোজ দেয়া ছোট একটি গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ বলে প্রমাণিত হয়েছে।সূত্র জানিয়েছে, দুটি পূর্ণ ডোজের সাফল্যের হার কম থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এটি অনুমোদন দেয়ার কথা বিবেচনা করছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, সিরামের টিকা প্রস্তুত হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে, প্রায় ৫ কোটি থেকে ৬ কোটি ডোজ পেতে পারে দেশটির নাগরিকরা।

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি এজেডডি১২২২ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারে। প্রায় ১০ মাস ধরে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণার ফল এ টিকা।

টিকাটি খুবই নিরাপদ ও কার্যকর বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। তারা বলেছেন, এটি করোনার সংক্রমণ ছড়ানো কমিয়ে আনে। এ ছাড়া করোনায় মৃত্যু কমিয়ে আনতেও এটি সহায়ক।

কার্যকর প্রমাণিত হলে বিশ্বে প্রায় ৪৫০ কোটি টিকা প্রয়োজন হতে পারে।

সব কিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে করোনাভাইরাসের এ টিকাটি বাংলাদেশ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের বেসরকারি ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস টিকাটি আমদানি করে সরবরাহ করবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশও টিকাটি তৈরির চেষ্টা করবে বলে বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ।

করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে সামনের সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা আগে টিকা পাবেন। 

Share.