পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর নেই। কলকাতার বেল ভিউ ক্লিনিকে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মৃত্যু হয় তার।
সৌমিত্রের বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে উপমহাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে। শোক জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘ফেলুদা আর নেই। অপু চিরবিদায় বলেছেন। বিদায় সৌমিত্র দা চট্টপাধ্যায়। নিজের সময়ে তিনি কিংবদন্তি ছিলেন। বিশ্ব, ভারত ও বাংলা চলচ্চিত্র একজন মহিরুহ হারাল।’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেপ্টেম্বরে বেল ভিউয়ে ভর্তি হন সৌমিত্র। ক্যানসারের সঙ্গেও লড়ছিলেন তিনি। কখনও উন্নতি কখনও অবনতি, এ দোলাচলে চলছিল সৌমিত্রর হাসপাতালবন্দি জীবন। প্লাজমা থেরাপি, শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচারসহ নানাভাবে এই অভিনেতাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও পেরে ওঠেননি চিকিৎসকরা।
কলকাতার মির্জাপুরে জন্মগ্রহণ করা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অস্কার জেতা সত্যজিতের ৩৪টি সিনেমার মধ্যে ১৪টিতে অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন মৃণাল সেন, অজয় করের মতো পরিচালকদের সঙ্গেও। সত্যজিত রায়ের অপু ও ফেলুদা চরিত্রের রূপায়ন করে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে স্থায়ী আসন গাঁড়েন এই অভিনেতা।
১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে ‘অপুর সংসার’-এ প্রবেশের পর একটানা অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সৌমিত্র। তার অভিনীত অন্যতম ছবিগুলো হলো দেবী, তিন কন্যা, চারুলতা, অরণ্যের দিনরাত্রি, অশনি সংকেত, ঝিন্দের বন্দী, অপরিচিত, তিন ভুবনের পাড়ে, আতঙ্ক, পারমিতার একদিন, বেলা শেষে ও ময়ূরাক্ষী।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি অনেক নাটকেও অভিনয় করেছেন; লিখেছেন গান ও নাটক। ছিলেন অসমান্য আবৃত্তিকার।
চলচ্চিত্রে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার ছাড়াও ফ্রান্স সরকারের ‘লিজিয়ন অব অনার’ পদকে ভূষিত হন এই অভিনেতা। ২০০৪ সালে তাকে ‘পদ্মভূষণ’ খেতাব দেয় ভারত সরকার। ♦