করোনাকালে সাধারণ দাঁতের সেবা যেমন ডেন্টাল চেকআপ, স্কেলিং-পলিশিং, ফিলিং, টুথ হোয়াইটিনিং, দাঁত তোলা, দাঁত বাঁধানো, রুট ক্যানেল, আঁকাবাঁকা দাঁতের চিকিৎসাসহ দাঁতের সৌন্দর্যবৃদ্ধি ইত্যাদির জন্য ডেন্টাল চেম্বারে যাওয়া পরিহার করতে হবে। পরামর্শের জন্য নিকটস্থ কিংবা পরিচিত কোনো ডেন্টাল সার্জনের সঙ্গে টেলি-কনসালটেন্সি করতে হবে। এমন পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দাঁত-মাঁড়ি সর্বোপরি মুখের সার্বিক যত্নের জন্য ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল খেতে হবে। যত্নসহকারে দাঁত ব্রাশ ও মাউথ ওয়াশ ব্যবহারসহ কার্বোনেটেড কোমল পানীয় পরিহার করতে হবে।
দেহের অন্য অঙ্গের চেয়ে মুখ নাক করোনা ভাইরাসের বিশেষ আক্রমণস্থল হিসেবে বিবেচিত। দাঁতের চিকিৎসার সময় ডাক্তার ও রোগী উভয়ে ভাইরাল সংক্রমণের বিশেষ ঝুঁকিতে থাকেন।
করোনাকালে দাঁতের যেসব সমস্যায় অবহেলা করা যাবে না:
• মুখের ভেতর বা দাঁতের অসহনীয় ব্যথা
• দুর্ঘটনায় চোয়াল বা দাঁত ভেঙে যাওয়া
• মাড়ি থেকে ঘন ঘন রক্তপাত
• চোয়ালের কোনো অংশে ফুলে যাওয়া
• দাঁত দিয়ে শক্ত কিছু ভাঙতে গিয়ে দাঁত ফেটে গেলে
• মুখের কোনো অপারেশনের পরে ক্ষত শুকাতে অতিরিক্ত সময় নিলে আগের লাগানো আলগা দাঁত বা ডেঞ্চার ও ক্যাপ-ব্রিজ ইত্যাদিতে ফাটল ধরা বা নষ্ট হওয়া
• বাঁকা দাঁত সোজা করার অর্থোডেন্টিকের জন্য মুখে লাগানো ব্রেস কোনো অসুবিধা সৃষ্টি করলে।
করোনা মহামারিতে হঠাৎ অসুস্থতা অনেককে আরও বিড়ম্বনায় ফেলছে। চাইলেও ডাক্তারের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। এ কারণে যেকোন সমস্যায় ঘরোয়া চিকিৎসার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ কারণে দাঁতের ব্যথায় যাতে না ভোগেন, সে জন্য সাবধান হওয়া জরুরী।
করোনাকালে দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরামর্শ:
* সুস্থ দাঁতের যত্নে সারাদিন কী খাচ্ছেন সে ব্যাপারে যত্নবান হোন
* দিন ও রাতে দুই বার ব্রাশ করুন
* দাঁতের ফাঁক থেকে ময়লা খাদ্যকণা বের করে আনার জন্য ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করা উচিত। ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্তত একবার ফ্লস করবেন
* সকাল ও রাতে হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলিকুচি করতে পারেন
* দাঁতে ফাটল ধরতে পারে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। যেমন বোতল বা চুলের পিন খুলতে দাঁত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন
* পরিষ্কার আঙুল দিয়ে দুই মিনিট ব্রাশ করার পরে মাড়ি ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে
* সকাল ও রাতে জিভ পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। অনেক ওষুধের দোকানে টাং ক্লিনার পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করে জিভ পরিষ্কার করতে পারেন। এতে মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে। সে সঙ্গে দুর্গন্ধজনিত সমস্যা কমে যাবে
* দাঁতে আটকে থাকা খাবার সরাতে কখনও টুথ পিক বা পিন ব্যবহার করবেন না । এতে মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। বরং ব্রাশ ও ফ্লস করে তা পরিষ্কারের চেষ্টা করুন
* শিশু ও বয়স্কদের দাঁতের সুরক্ষায় তুলনামূলক বেশি যত্নবান হতে হবে
* মাড়ি ফুলে গেলে সরিষার তেল ও লবণ দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করতে পারেন
* প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। ফাস্ট ফুড, অ্যালকোহল, সোডা, চকলেট, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
* দাঁতে খুব বেশি সমস্যা অনুভব করলে ফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ♦
