যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের আহবানে সাড়া দিয়ে ফেসবুকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন দেখানো বন্ধ রেখেছে নামি-দামি কয়েকশ’ কোম্পানি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিমূলক বক্তব্য না সরানোতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইনিং শুরু করে সংগঠনগুলো।
তাই এর সুরহা করতে সংগঠনগুলোর সঙ্গে জুম প্ল্যাটফর্মে ভার্চুয়াল মিটিং করেছে ফেসবুক। এতে উপস্থিত ছিলেন ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ ও চিফ অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গসহ অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ঘণ্টাখানের বেশি সময় ধরে আলোচনা চললেও কোনো সমাধান বের হয়নি। মিটিং শেষে ফেসবুককে বর্জনের ডাক দেওয়া সংগঠনের সদস্যরা ক্ষোভ ঝেড়েছেন।
কালার অব চেঞ্জ সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রাসাদ রবিনসন বলেন, শুধু মিটিংয়ে উপস্থিত থাকার জন্য বাহবা আশা করছিলেন তারা ( মার্ক জাকারবার্গ, শেরিল স্যান্ডবার্গ)।
স্টপ হেট ফর প্রফিট ক্যাম্পেইনসহ অন্য সংগঠনগুলোর প্রধানরা জানিয়েছেন, এখনও বিজ্ঞাপনদাতাদের বয়কটকে গুরুত্ব দিচ্ছে না ফেসবুক। ফ্রি প্রেস সংগঠনের কো-সিইও বলেন, আমরা কী চাচ্ছি সে বিষয়ে কথা না বলে গৎবাঁধা বুলি আওড়ে গেছেন। তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে সব কথা থাকে এ মিটিংয়ে তার চেয়ে ভিন্ন কিছু ছিল না।
সংগঠনগুলোর মুখপত্ররা জানান, তারা ফেসবুক এক্সিকিউটিভদের সামনে ১০ দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে ছিলো নাগরিক অধিকার বিষয়ে কাজ করেছেন এমন এক্সিকিউটিভ নিয়োগ, বিনা হস্তক্ষেপে নিয়মিত অডিট রিপোর্ট পেশ করতে দেওয়া, কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের নীতিমালা আপডেট করা। এর মধ্যে শুধু নাগরিক অধিকার বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে এক্সিকিউটিভ হিসেবে নিয়োগ দিতে রাজি হয়েছেন জাকারবার্গ ও স্যান্ডবার্গ। বাকি ইস্যুতে তারা আগ্রহ দেখাননি।
ফেসবুকের মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন জানিয়েছেন, ২০০ হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট (শ্বেতাঙ্গদের সেরা দাবি করে যারা) গ্রুপকে প্ল্যাটফর্মটি থেকে সরানো হয়েছে। ক্যাম্পেইনের সংগঠকদের দাবিগুলো এ মিটিংয়ে শোনার সুযোগ হয়েছে আমাদের। তারা প্ল্যাটফর্মটিতে বিদ্বেষমূলক কোনো বার্তা দেখতে চান না। আমাদেরও এটাই চাওয়া। আমরা জানি, আমাদেরকে বক্তব্য নয়, কার্যকলাপ দিয়ে বিচার করা হবে। সংগঠনগুলো আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
২৫ মে পুলিশের নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ইস্যুতে ট্রাম্পের হুমকিমূলক বক্তব্য না সরানোতে ফেসবুককে বর্জনের ডাক দেয় বিভিন্ন সংগঠন। এরই ধারাবাহিকতায় #StopHateforProfit ক্যাম্পেইন শুরু করে এডিএল, এনএএসিপি ও কালার অব চেঞ্জ নামের কয়েকটি সংগঠন। এ ক্যাম্পেইনের ফলে গত কয়েক দিনে অ্যাডিডাস, স্টারবাকস, লিভাইস, বেন অ্যান্ড জেরিস, এইচপি, মজিলা, এইচপি, ভেরিজন, ফোর্ড, কোকা-কোলা, হোন্ডা, পেপসিকো ও হোন্ডাসহ কয়েকশ’ কোম্পানির বিজ্ঞাপন হারায় ফেসবুক। ♦