বিশ্ব অর্থনীতি ডেস্ক: নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো গতকাল আশার কথা শুনিয়েছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে নিউইয়র্কের নাজুক পরিস্থিতির অবসান নিয়ে এখন আশার কথা উচ্চারিত হচ্ছে। সংক্রমিত হওয়া ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে; যদিও বাড়ার এ হারে কিছুটা ভাটা পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর নিউইয়র্কে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ রাজ্যের প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যে একজন এখন করোনায় আক্রান্ত। পুরো দেশে আক্রান্ত দুই লাখের কাছাকাছি।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত আরও ৬৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শুধু নিউইয়র্কে মৃত মানুষের সংখ্যা এখন ১০ হাজার ৫৬। অন্যদিকে, নিউইয়র্কসহ পুরো দেশে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ হাজার ৬৪০ জন। এর মধ্যে নিউইয়র্ক শিক্ষা বিভাগের ৫০ জন কর্মচারী-কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ২১ জন শিক্ষক। তবে গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রথম ১৩ এপ্রিল নিউইয়র্কে প্রাণহানির সংখ্যা ৭০০-এর নিচে নেমে এসেছে।
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেন, এ ভাইরাস নিখুঁত ঘাতক ভাইরাস। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে নিউইয়র্কে আরও প্রায় দুই হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন।
রাজ্যের বেশির ভাগ মানুষ নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করেন, তাই ঘনবসতিও বেশি। প্রথম দিকে করোনায় আক্রান্ত ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টির বাসিন্দা একজন অথবা দুজন কয়েক শ মানুষকে সংক্রমিত করেছেন। তারপর ভাইরাসটি বিদ্যুৎ–গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, ৯৪ শতাংশ মানুষ নিউইয়র্ক নগরীর হাসপাতালে ভর্তি। বাকি রোগীরা ওয়েস্টচেস্টার, রকল্যান্ড ও লং আইল্যান্ড কাউন্টিতে সেবা নিচ্ছেন। অন্যান্য কাউন্টিতে পর্যাপ্ত হাসপাতালও নেই।
গভর্নর বলেন, রাজ্যের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নিউইয়র্ক সিটির পাঁচটি বরোতে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ১ লাখ ৪ হাজার ৪১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যা ২১০৮ সালের আদমশুমারি তথ্য অনুসারে ৮৪ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ১ দশমিক ২ শতাংশের সংক্রমণের হার। আমেরিকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের দিক দিয়ে এখন সবার ওপরে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত ৫ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি।
নিউজার্সি ও নিউইয়র্কের রাজ্য গভর্নর জোর দিচ্ছেন, যেভাবেই হোক সামাজিক বিচ্ছিন্নতা অব্যাহত রাখতে হবে। এসব মৃত্যু শুধুই সংখ্যা নয় উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আমাদের আরও বেশ কিছুদিন মেনে চলতেই হবে।
নিউইয়র্কে সবচেয়ে খারাপ সময়ের অবসান ঘটছে উল্লেখ করে কুমো আশাবাদের কথা শুনিয়েছেন। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেটিকাট, পেনসিলভানিয়া ও রোড আইল্যান্ড নিয়ে গঠিত এ কমিটি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, বিশেষজ্ঞ মতামত এবং তথ্য জরিপ সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে বলে জানানো হয়েছে। সতর্কতার সঙ্গে সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কথা ভাবতে শুরু করেছেন রাজ্য নেতারা।
নিউইয়র্কে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমেছে, কিন্তু আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। লোকজনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে ভীতি কাজ করছে। অধিকাংশ আক্রান্ত লোকজনই ঘরে থেকে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে। যাদের শারীরিক চরম অবস্থা চরম নাজুক হচ্ছে, তারাই কেবল হাসপাতালে যাচ্ছে।