সময় নির্ধারণ
প্রতিদিন আমরা আবার নতুন করে জীবন শুরু করার সুযোগ নিয়ে জেগে উঠি। দিনের সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য কীভাবে সময় নির্ধারণ করতে হবে তা জানা জরুরি। আপনি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কিছু একটা শিক্ষা দিয়ে শুরু করতে পারেন, যেমন দাঁত ব্রাশ করে দিনটির শুরু। সব কাজের ‘সময়’ নির্ধারণ করতে পারেন। যেমন- গোসল করা, জামা বা জুতো পরা, সকালে নাস্তা করা, টিভি দেখা, ঘর পরিষ্কার করা, খেলনা নিয়ে খেলা ইত্যাদি।
তবে শিশুর জীবনকে অতিরিক্ত সময়সূচি নির্ভর করবেন না। বরং সময় মতো কাজ শেষ করার জন্য পুরস্কার নির্ধারণ করে আপনি এটি আনন্দদায়ক করতে পারেন।
অর্থ ব্যয়
বয়সের ওপর নির্ভর করে আপনি শিশুকে অর্থের মূল্য ও গুরুত্ব শিখিয়ে দিতে পারেন। এটি তাদের পরবর্তী জীবনে অর্থের বিরুদ্ধে জয়ী করে তুলবে। একটি পরিষ্কার জারে অর্থ সঞ্চয় করা দুর্দান্ত শুরু হতে পারে। শিশুদের পক্ষে অর্থের বাজেট শেখা আরও সহজ হবে যদি তারা বুঝতে পারে যে এ পৃথিবীতে বাবা-মায়ের ভালোবাসা ব্যতীত আর কিছুই অর্থ ছাড়া হয় না।
গৃহস্থালির কাজ করা
শিশুকে ছোট কিংবা বড় যেকোনো কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শেখাতে তাদেরকে বাড়ির কাজে নিযুক্ত করতে পারেন। শিশুটির বয়স বিবেচনা করে আপনি তাকে জামাকাপড় ইস্ত্রি করানো, বাসন ধোয়া, ঘর পরিষ্কার করা, বোতাম সেলাই করা, সকালের নাস্তা তৈরি করা, বাগান করা ইত্যাদির মতো সহজ কাজগুলো শিখিয়ে ফেলতে পারেন।
যোগাযোগ দক্ষতা
যোগাযোগ দক্ষতা ব্যক্তিগত ও পেশাগত উভয় জীবনে সাফল্যের মূলে রয়েছে। ছোটবেলা থেকে শিশুদের ভালো যোগাযোগের দক্ষতা অর্জনের প্রশিক্ষণ দেয়া বাবা-মায়ের কর্তব্য। দুর্বল আলাপচারিতার দক্ষতা সম্পন্ন বাচ্চারা তাদের সমস্যাগুলো কাছের মানুষের সঙ্গে খুব একটা ভাগ করে নিতে পারে না। ফলে উদ্বেগ, হতাশা বা ক্রমবর্ধমান মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে পারে। ব্যক্তিগত যোগাযোগের দক্ষতার বিকাশকে স্বাস্থ্যকর সামাজিক-সংবেদনশীল ক্ষমতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি আপনার পরিবার ও বাইরেও কার্যকরভাবে লোকদের বুঝতে, কথোপকথন করতে এবং যোগাযোগ করতে সক্ষম করবে।
আপনার বাচ্চাকে কোনো বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কথা বলা, বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কথা বলা এবং সমালোচনা বা উপহাস সুন্দরভাবে মোকাবিলা করার মতো কিছু জীবন দক্ষতা শেখাতে পারেন। তাকে কোনো একটি বিষয় দিয়ে তার ওপর বক্তব্য দিতে বলতে পারেন। এ জাতীয় ছোট কিন্তু উৎসাহজনক উদ্যোগগুলো আপনার বাচ্চাকে শক্তিশালী যোগাযোগ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। সামাজিক ইঙ্গিতগুলো ধরতে পারা, অন্যদের কন্ঠস্বর শোনা এবং সঠিক প্রতিক্রিয়া জানানো আপনার বাচ্চাকে বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করার প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের মুখোমুখি করতে যথেষ্ট স্মার্ট করে তুলতে পারে।
নিরাপত্তা দক্ষতা
কোনোক্রমে দুর্ঘটনা ঘটলেও সতর্কতা ঝুঁকির মাত্রা হ্রাস করতে পারে। এখন অবরুদ্ধ সময়ে আপনার সন্তানকে প্রাথমিক জীবনরক্ষার দক্ষতা সম্পর্কে শেখানোর সুযোগ রয়েছে। শিশুকে তার নাম, বাড়ির ঠিকানা ও ফোন নম্বর মুখস্ত করতে সহায়তা করতে পারেন। খেলতে গিয়ে প্রায়ই আহত হয় তারা। এ জাতীয় দুর্ঘটনা রোধে আপনি আপনার সন্তানকে প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।
আমাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রয়োজনীয় নানা উপকরণ যেমন নেইল কাটার, রান্নাঘরের ছুরি, ম্যাচ, বাগানের সরঞ্জাম ইত্যাদির সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন। এ সরঞ্জামগুলোর নিরাপদ প্রয়োগ শেখা আপনার সন্তানকে কেবল বৈচিত্র্যময় জীবন দক্ষতায় সক্ষম করে তুলবে না, তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে। আপনার বাচ্চাকে আগুন লাগলে কী করতে হবে তা শেখাতে বাড়িতে মহড়ার ব্যবস্থা করতে পারেন। বাড়ির ভেতরে উদ্বিগ্ন হওয়া বা লুকিয়ে থাকার পরিবর্তে বাচ্চাকে তাৎক্ষণিকভাবে বাইরে বেরিয়ে পড়তে ও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফায়ার সার্ভিসের লোকদের কল করতে শেখান। ♦