জার্মান সরকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির ৪৬ লাখ মানুষ জুয়ায় আসক্ত অথবা আসক্তির ঝুঁকিতে। প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের এক মন্ত্রী জুয়ায় কিছুটা কড়াকড়ি আরোপের প্রস্তাব করেছেন।
জার্মানির কেন্দ্রীয় মাদক কমিশনার বুরখার্ড ব্লিয়েনার্ট প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। সেখানে দেখা যায়, প্রায় ১৩ লাখ জার্মান জুয়ায় পুরোপুরি আসক্ত এবং আরও ৩৩ লাখ আসক্তির পথে।
‘গ্যাম্বলিং অ্যাটলাস’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনটি ২০২১ সাল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, জার্মানির ৩০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জুয়া খেলেন। ৭ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মাত্রাতিরিক্ত জুয়া খেলার ফলে আর্থিক, সামাজিক ও স্বাস্থ্য সংকটে ভুগছেন।
কমিশনার ব্লিয়েনার্ট বলেন, জুয়া খেলে খুশি হচ্ছেন এমন ঘটনা বিরল।
প্রতিবেদনটি বলছে, ২১ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণ ও যুবকদের মাঝে জুয়ায় আসক্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। একই সঙ্গে তারা মানসিক সমস্যা ও উচ্চ মাত্রায় অ্যালকোহলে আসক্ত হচ্ছেন। প্রতিবেদনে জুয়া খেলাকে ‘অতিমাত্রার ও ধংসাত্মক অংশগ্রহণ’ বলে উল্লেখ করা হয়। কারণ জুয়াড়িরা নিজেদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান এবং বারবার খেলতে থাকেন। তাদের এই আসক্তি অন্যদের কাছে লুকান এবং সমাজ থেকে আলাদা হয়ে পড়েন।
জুয়ার ঝুঁকিতে অভিবাসীরাও রয়েছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, অভিবাসীরা যেসব ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন, তা ভুলতে তারা এতে জড়িয়ে পড়তে পারেন। এছাড়া জার্মানিতে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনে করলে এবং আর্থিক সংকটও এক্ষেত্রে নিয়ামকের ভুমিকা রাখতে পারে।
গেম হলগুলোয় চিরাচরিত স্লট ম্যাশিন বা আর্কেড গেমগুলোর পাশাপাশি লাইভ খেলাও এখন জুয়ার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। জার্মান ফুটবলে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালে ডয়চে ভেলের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বেটিং কোম্পানি বিডাব্লিউআইএন জার্মানির ফুটবল সংস্থা ডিএফবির অফিশিয়াল পার্টনার। এছাড়া সংস্থাটি ইউনিয়ন বার্লিন, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, কোলন, সেইন্ট পাউলি ও ডায়নামো ড্রেসডেন ক্লাবেরও সহযোগী।
জার্মান জাতীয় দল ও বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক গোলরক্ষক, অধিনায়ক ও ক্লাবের প্রধান নির্বাহী অলিভার কান ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বেটিং কোম্পানি টিপিকোর মুখপাত্র ছিলেন। বেটিংয়ের বিজ্ঞাপন ছাড়া জার্মান ফুটবল কল্পনাই করা যায় না। এই খাত থেকে সরকারও মুনাফা করছে। ♦