৯ থেকে ১৮ বছর বয়স মানুষের ‘পিক বোন মাস’ বা হাড় ঘন হওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়। এ জন্য এই সময় ক্যালসিয়াম খাওয়া ও ভার বহন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বয়সে ও পূর্ণবয়স্ক মানুষেরও গড়পড়তায় ১ হাজার ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়।
তবে বয়সভেদে কিছু রকমভেদ রয়েছে। মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হওয়ার দুই বছর আগে ও পরের সময়টার মধ্যে উচ্চতা বাড়ে। এই সময়ে সর্বাধিক উচ্চতা বাড়ানোর জন্য পূর্ণমাত্রায় ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিত। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বা স্তন্যপান করানোর সময় নারীদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা বেশি থাকে।
অস্টিওপোরোসিস ও হাড় ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধের জন্য ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। কিন্তু একজন মানুষের হাড়ের ঘনত্ব তৈরি হয়ে যায় অল্প বয়সেই, তাই শৈশব থেকেই এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
ক্যালসিয়ামের স্বল্পতা হলে তেমন কোনো উপসর্গ না-ও হতে পারে। তবে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে, যেমন হাড় ও মাংসপেশির ব্যথা, বিষন্নতা, ভঙ্গুর নখ ও হাড়, চুলের রুক্ষতা, ত্বকের শুষ্কতা ইত্যাদি।
খাবারের মাধ্যমে ছোটবেলা থেকেই পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে হবে। তাই জানতে হবে, কোন খাবারে কেমন ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (পনির, দই), ভুট্টা, শিম, মসুর ডাল, কাঠবাদাম, ছানার পানি, শাকসবজি, সার্ডিন মাছ, স্যামন মাছ, কাচকি মাছ, চিয়া সিড, ডুমুর ইত্যাদি খাবারে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে। এ ছাড়া ফর্টিফাইড খাবার, সয়া প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ও তোফুতে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। দৈনিক এক হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে দুই টুকরা পনির/ দুই টুকরা গ্রেইন ব্রেড/ ব্রকলি বা এক কাপ দই খেলে।
ফলের মধ্যে কমলা, খুবানি, শুকনা ডুমুর, কিউয়ি, মালবেরি, নাশপাতি, আঙুর, পেঁপে, স্ট্রবেরি, কলায় প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে।
ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথর হয়, এই ধারণা ঠিক নয়। তবে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটফাঁপা, ডায়রিয়া ও হৃদরোগ হতে পারে। কখনো না বুঝে দিনের পর দিন ক্যালসিয়াম বড়ি খেলে হাইপারক্যালসেমিয়া বা রক্তে ক্যালসিয়ামের আধিক্য দেখা দিতে পারে।
৩০ বছর বয়সের পর হাড়ের ক্যালসিয়াম কমে যেতে থাকে। মধ্যবয়সে কমে যাওয়ার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। তখন হাড় ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ♦