কোম্পানি সচিবরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারলে করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে পারবে না। ফলে কোম্পানি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হবে। এতে কোম্পানি ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এমনকি উদ্যোক্তারা নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপদে ফেলতে পারে।
চট্টগ্রাম ক্লাবে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসনের মান বাড়ানোর লক্ষ্যে করপোরেট গভর্ন্যান্স সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) দিনব্যাপী এই সম্মেলনে শতাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির সচিবরা অংশ নেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. মিজানুর রহমান।
‘করপোরেট গভর্ন্যান্স ফর লিস্টেড সিকিউরিটিজ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান।
এতে সভাপতিত্ব করেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, বিএসইসি সব ইস্যুয়ারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। করপোরেট ক্রাইসিস হ্রাসকরণে বিএসইসি ১৫ বছর ধরে কাজ করছে। কোম্পানির বোর্ড, বোর্ড কমিটি ও ইনভেস্টরদের মধ্যকার জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন এবং নিরীক্ষক নিয়োগের বিষয়ও তদারক করে বিএসইসি।
ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, আজকের সম্মেলনের উদ্দেশ্য করপোরেট গভর্ন্যান্স সম্পর্কে মাইন্ড সেট, করপোরেট কালচার ও এনভায়রনমেন্ট নির্ধারণ এবং সেই অনুসারে জবাবদিহি নিশ্চিত করা। করপোরেট গভর্ন্যান্স কোম্পানির গুরুত্ব বাড়ায় এবং এর সঙ্গে নতুন মূল্য যুক্ত করে।
আসিফ ইব্রাহীম বলেন, স্বপ্লমেয়াদি পুঁজির জন্য ব্যাংক অর্থায়ন করবে। দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজার। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাংক নির্ভরতা বেশি। এটা থেকে বের হয়ে আসতে পারলে বাজারের গভীরতা আরও বড় হবে। এজন্য আমাদের কিছু রেগুলেটরি কাজ করছে। কারণ ভালো করপোরেট গভর্ন্যান্স স্বচ্ছ নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণ তৈরি করে, নেতৃত্বকে নির্দেশনা দেয় এবং শেয়ারহোল্ডার, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা এবং কর্মচারীদের স্বার্থ শৃঙ্খলাবদ্ধ করে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি করতে সহায়তা করে। করপোরেট সুশাসন বিনিয়োগকারী এবং স্টেকহোল্ডারদের একটি কোম্পানির দিকনির্দেশনা এবং ব্যবসায়িক সততা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে উপযুক্ত রিটার্ন পেতে সহায়তা করে। আরও গুণগত পরিবর্তন আসবে।
প্রথম সেশনে ‘রিলেটেড পার্টি ট্রান্সফেকশন অ্যান্ড ডিসক্লোজার’ শিরোনামের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হোদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংয়ের পার্টনার সাব্বির আহমেদ এফসিএ।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি প্রতিষ্ঠান রহমান রহমান হকের পার্টনার মেহেদী হাসান এফসিএ উপস্থাপন করেন ‘অডিটিং অব ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাটমেন্ট অ্যান্ড অডিট অপিনিয়ন’ শিরোনামের প্রবন্ধ।
দ্বিতীয় সেশনেও দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে আখতার মতিন চৌধুরী ‘করপোরেট গভর্ন্যান্স অডিট’ এবং বিএসইসি কমিশনার ড. মিজানুর রহমান ‘রোল অব করপোরেট বোর্ড অ্যান্ড বোর্ড কমিটি’ শিরোনামের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সম্মেলনে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সচিবরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংশ্লিষ্ট উপস্থাপকরা। ♦