যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসন। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি শপথ নেন।
দেশটির ২৩৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি হলেন।
উদারপন্থী বিচারপতি স্টিফেন ব্রেয়ার অবসর নেয়ায় ৫১ বছর বয়সী জ্যাকসনকে তার জায়গায় মনোনয়ন দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য ব্রেয়ার দাপ্তরিকভাবে বৃহস্পতিবার অবসরে যান।
এপ্রিলের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনোনীত জ্যাকসনের নিয়োগ চূড়ান্ত করতে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ভোটাভুটি হয়। ৫৩-৪৭ ভোটে তার নিয়োগ অনুমোদন করে সিনেট। তিনজন রিপাবলিকানও তার নিয়োগের পক্ষে ভোট দেন।
জ্যাকসন এমন সময় সুপ্রিম কোর্টে যোগ দিতে যাচ্ছেন, যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ রক্ষণশীল বিচারপতিরা আদালতের রায়ের ক্ষেত্রে তাদের প্রভাব খাটাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে এখন ৬-৩ ব্যবধানে রক্ষণশীলরা এগিয়ে রয়েছেন। জ্যাকসনের দায়িত্ব গ্রহণে সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের ৬-৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় কোনো পরিবর্তন আসছে না। জাতীয়ভাবে গর্ভপাত অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে ১৯৭৩ সালের ‘রো বনাম ওয়েড’ মামলার ঐতিহাসিক রায় মাত্র ছয় দিন আগে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বাতিল করে দেন রক্ষণশীল নিয়ন্ত্রিত সুপ্রিম কোর্ট। এরপর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
চলতি সপ্তাহে রয়টার্স ও ইপসস পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, গর্ভপাত সংক্রান্ত রায়ের পর ৫৭ শতাংশ আমেরিকানই আদালত সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। চলতি মাসের শুরু দিক বিবেচনায় এটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। তখন স্বল্প ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আমেরিকান আদালত সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতেন।
উদারপন্থী বিচারপতি জ্যাকসন এক বিবৃতিতে বলেন, সর্বোচ্চ আন্তরিকতাসহ আমি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানকে সমর্থন ও সুরক্ষা দেয়ার এবং ভয়ভীতির ঊর্ধ্ব উঠে বিচারকাজ পরিচালনার আনুষ্ঠানিক পবিত্র দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।
জ্যাকসন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের ১১৬তম বিচারপতি। ১৯৮৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার পর তিনি ষষ্ঠ নারী ও তৃতীয় কৃষ্ণাঙ্গ বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
জ্যাকসন দায়িত্ব নিলে নয় সদস্যের সুপ্রিম কোর্টে নারী বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়াবে চারজনে। অন্য পাঁচ পুরুষ বিচারপতির মধ্যে চারজন শ্বেতাঙ্গ ও একজন কৃষ্ণাঙ্গ। ♦