যোগ বা ইয়োগা অত্যন্ত প্রাচীন একটি শাস্ত্র। এর মধ্যে রয়েছে আমাদের শারীরিক সুস্থতা, মানসিক প্রশান্তি ও চারিত্রিক উন্নতি সাধনের সুযোগ। পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গেও যোগব্যায়ামের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরেও নানা ধরনের সুবিধা–অসুবিধা দেখা দেয়। যেমন ঠান্ডা আবহাওয়ায় নানা ধরনের রোগবালাই কমবেশি সবার মধ্যেই দেখা যায়। নিয়মিত যোগচর্চার মাধ্যমে সহজে এই রোগগুলো থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারি।
ইয়োগার শাখা মূলত আটটি। এর তিনটি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। এগুলো হলো আসন (শারীরিক ব্যায়াম), প্রাণায়াম (নিশ্বাসের ব্যায়াম) ও মেডিটেশন (ধ্যান)। এই তিন শাখা নিয়মিত চর্চা করে নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখা সম্ভব।
ইয়োগা যেকোনো বয়সে যেকোনো পরিবেশে করা যায়। শারীরিক সক্ষমতা না থাকলেও প্রাণায়াম বা ধ্যানের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখা যায়।
সেই সঙ্গে ইয়োগা আমাদের শেখায় নিয়মানুবর্তিতা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিদ্রাসহ সুস্থ থাকার অন্যান্য উপায়।
শীতকালের সাধারণ সর্দি-কাশি ও ঠান্ডাজনিত রোগে আমরা ইয়োগার সাহায্য নিতে পারি। ক্রিয়া ইয়োগার জলনেতি, সূত্রনেতির সঠিক চর্চায় সাইনোসাইটিস ও অ্যাজমার মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
করোনাকালেও যোগ উপকারী। করোনায় শরীর দুর্বল ও নিস্পৃহ হয়ে পড়ে। তাই ইয়োগার সময়ে হালকা কিছু আসন, যেমন ঘাড়, মাথা, হাত-পা ও কোমরের স্ট্রেচিং করে অঙ্গগুলোকে ঝালিয়ে নিতে পারি।
-প্রাণায়াম-
প্রাণায়ামের ক্ষেত্রে প্রথম শর্ত, পাটিতে (ইয়োগা ম্যাটে) আরাম করে বসে নিশ্বাসের দিকে বিশেষ নজর রাখা। যাঁরা ইয়োগার সঙ্গে পরিচিত, তাঁরা সহজেই নিশ্বাসের মুদ্রাগুলো ধরতে পারবেন। তবে ইয়োগায় নবীন হলে অবশ্যই একজন প্রশিক্ষকের সাহায্য নিলে ভালো হয়।
প্রাণায়াম ও ধ্যানের সময় চাইলে আমরা দেয়ালে হেলান দিয়ে বসতে পারি। শরীর দুর্বল থাকলে হালকা আসনগুলো বেছে নিতে হবে। আসন ও প্রাণায়াম যেমন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, তেমনি ধ্যানের মাধ্যমে আমরা ধৈর্যধারণ ও চারিত্রিক দৃঢ়তা অর্জন করতে পারি।
ধৈর্যসহকারে নিয়মিত ইয়োগা চর্চা করে আজকের আধুনিক যান্ত্রিক জীবনেও আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে পারি। ♦