প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ থেকে ১২ অক্টোবর ২০২১ উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ। এবার সপ্তাহটির প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘টেকসই অর্থায়ন এবং প্রতারণা ও গুজবের প্রতিরোধকরণ’।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনের (আইওএসকো) সঙ্গে যৌথভাবে দিবসটি পালন করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিনিয়োগকারীদের শিক্ষার উন্নতি ও উন্নয়নের জন্য আইওএসকোর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি রয়েছে—এটি একটি বিশ্বব্যাপী প্রচার, যার লক্ষ্য বিনিয়োগকারীদের শিক্ষা এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা প্রচার করা সেই ধারাবাহিকতায় সিএসই (চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড) গতকাল ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করে বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সুরক্ষা করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। মূল নিবন্ধ উপস্থাপনা করেছেন ড. মোহাম্মদ সালেহ্ জুহুর। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক এবং বিশেষ বক্তব্য দেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আরিফ আহমেদ।
শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আমাদের দেশের মানুষের জন্য মৌলিক অধিকারসমূহ অর্থাৎ অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিত্সা ও বাসস্থান নিশ্চিত করার কথা আছে। আমাদের সব কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে হচ্ছে এই অধিকারগুলো নিশ্চিত করা।
এক্ষেত্রে সবাইকে তার নিজের অবস্থান থেকে ভূমিকা নিতে হবে এবং মুনাফা বানানোর প্রেক্ষাপটে থেকে আমাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন এই মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হয়।
সরকার এবং আমাদের লক্ষ্যও তাই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করা। শিল্পায়নসহ অন্য যত ধরনের ক্ষেত্রে আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছি; সব জায়গা থেকেই আমাদের লক্ষ্য হবে সঠিকভাবে নিজেদের ভূমিকাটুকু দায়িত্ব নিয়ে সম্পাদন করা।
টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে পরিবেশগত পরিবর্তনের দিকে, বিশেষ করে জলবায়ুর পরিবর্তন।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে ইতোমধ্যে গ্রিন বন্ড আছে, যেহেতু সিএসই’র প্রধান কার্যালয় হচ্ছে সমুদ্রের কোলঘেঁষে তাই তারা নতুন প্রোডাক্ট হিসেবে ব্লু বন্ড নিয়ে কাজ করার চিন্তা করতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করে বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সুরক্ষা করা, তাকে উপযুক্ত বিনিয়োগ পরিবেশ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যাপারগুলো বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পরিবেশ নিশ্চিত করা।
স্বাগত বক্তব্যে মো. গোলাম ফারুক বলেন, কোভিড-পরবর্তী বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ছড়িয়ে পড়েছে, সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এখন পৃথিবীময় যে চ্যালেঞ্জগুলো ছড়িয়ে পড়েছে তার মধ্যে হলো আর্থিক সংকট, সামাজিক ও পরিবেশগত বাধা পুঁজিবাজারে প্রধান সমস্যাগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। কেননা পুঁজিবাজার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, আর্থিক খাতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় পরিবেশগত, সামাজিক ও শাসন বিবেচনায় নেয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যা টেকসই অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ এবং প্রকল্পগুলোয় আরও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের দিকে পরিচালিত করে।
পরিবেশগত বিবেচনায় জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন এবং অভিযোজন, সেইসঙ্গে পরিবেশকে আরও ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সালেহ্ জুহুর। তিনি তার প্রবন্ধে বিশ্বের পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরেন। ♦