বাংলাদেশে কভিড-১৯ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটির মেয়াদ।
সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকার থেকে নির্দেশ দেয়ামাত্রই যেন বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া যায় এ জন্য ‘স্কুল রিওপেনিং প্ল্যান’ অনুযায়ী কার্যক্রম চলছে কি না তা মনিটরিং করছেন থানা শিক্ষা কর্মকর্তারা।
গত ২৩ আগস্ট থেকে সব শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে অফিস করছেন।
যা রয়েছে স্কুল রিওপেনিং প্ল্যানে
আসন
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রণয়ন করা স্কুল রিওপেনিং প্ল্যানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে বসার বিষয়টিকে। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের বসার পরিকল্পনা হিসেবে ৩ ফুট দূরত্ব রেখে বেঞ্চ স্থাপন করতে হবে।
এ ছাড়া শুধু পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আলাদা কক্ষে বসিয়ে ক্লাস পরিচালনা করতে হবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুপাতে বসাতে হবে। যেমন শনি ও মঙ্গলবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি; রবি ও বুধবার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি।
হাত ধোয়া ও মাস্ক পরিধান
সব সময় হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিতে বিদ্যালয়গুলোর সব মোটর লাইন সার্বক্ষণিক সচল রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে স্কুল রিওপেনিং প্ল্যানে। এ ছাড়া শতভাগ মাস্ক পরিধান করতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে স্কুল রিওপেনিং প্ল্যানে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়গুলোকে পর্যাপ্ত মাস্ক মজুত, সাবান, পানি, ব্লিচিং পাউডার ও প্যারাসিটামল নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
মগ-জগ ও থার্মোমিটার
শরীরের তাপমাত্রা মাপতে বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ড থেকে ইনফারেড থার্মোমিটার ক্রয় করতে বলা হয়েছে স্কুল রিওপেনিং প্ল্যানে। সেই সঙ্গে দুটি বালতি, জগ ও ১২টি মগ কেনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি
বিদ্যালয়গুলোর টয়লেট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা রয়েছে স্কুল রিওপেনিং প্ল্যানে। এ জন্য বিদ্যালয়ে হারপিক, সাবান কিনতে ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
পরিমার্জিত পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন
ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ পরিমার্জিত পাঠ পরিকল্পনা সংগ্রহের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষকরা যেন পরিকল্পনা অনুযায়ী পাঠদান করতে পারেন এবং অভিভাবকদের যুক্ত করতে পারেন সে নির্দেশনাও রয়েছে স্কুল রিওপেনিং প্ল্যানে।
শিক্ষাবর্ষের সমাপনী কার্যক্রম
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভব হলে মূল্যায়নের মাধ্যমে ফল প্রস্তুতের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া পঞ্চম শ্রেণির ছাড়পত্র ও প্রশংসাপত্র প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকা নেয়ার নির্দেশ
স্কুল খোলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে করোনারোধী টিকা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে আগের নির্দেশনা দেয়া সত্ত্বেও যারা টিকা নেননি কিংবা টিকা নিতে চান না, তাদেরকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকা না নিলে কারণ দর্শাতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, বিদ্যালয়ে উপস্থিত সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিতরণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সচেতনতা প্রচার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ♦