৯ তথ্য দিয়ে জানা যাবে হৃৎপিণ্ডের অবস্থা

0

সুস্থ হৃৎপিণ্ড (হার্ট) সবার কাম্য। এই অঙ্গের বেশিরভাগ রোগ নীরব ঘাতক। দীর্ঘদিন উপসর্গ ছাড়াই হৃৎপিণ্ডের রোগ সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তাই নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখতে হবে, হৃৎপিণ্ড কতটা সুস্থ, কতটা কর্মক্ষম অথবা কতটা অসুখের ঝুঁকি বহন করছে।

উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, অ্যানজাইনা, বাতজ্বর, বাল্বের অসুখ, জন্মগত হৃৎরোগ, হার্ট ফেইলিউর, কার্ডিওমায়োপ্যাথি, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন এসবই হৃৎপিণ্ডের অসুখ। হার্ট অ্যাটাক ও অ্যানজাইনা রোগের প্রকোপই বেশি। এতে হৃৎযন্ত্রের রক্তনালিতে ধীরে ধীরে চর্বি জমতে থাকে, হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং একসময় হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি আক্রান্ত হয়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক ও অ্যানজাইনা রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

এ ছাড়া রয়েছে বংশগত প্রভাব। হৃৎযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর খাবার, অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, ধূমপান বা তামাক-জর্দার ব্যবহার, অতিরিক্ত মদ্যপান, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চমাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল এবং ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম একেবারেই না করাও হার্ট অ্যাটাকের কারণ।

হৃৎপিণ্ডের অবস্থা জানা যাবে কীভাবে
একজন মানুষ পরবর্তী ১০ বছরের জন্য কতটা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে রয়েছেন, তা আগেই নির্ণয় করা যায়। অনলাইন ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে যে কেউ নিজের কয়েকটি শারীরিক তথ্য দিয়ে এ তথ্য বের করতে পারেন। সে অনুযায়ী তিনি সতর্ক হতে পারেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

হৃৎরোগের সম্ভাব্য ঝুঁকি যাচাইয়ের বেশ কয়েকটি অনলাইন ক্যালকুলেটর রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ফ্রামিংহাম স্কোরিং ক্যালকুলেটর উল্লেখযোগ্য। এই ক্যালকুলেটর ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে (https://reference.medscape.com/calculator/252/framingham-risk-score -২০০৮) প্রবেশ করতে হবে। ঝুঁকি যাচাইয়ে জন্য মোট ৯টি তথ্য দিয়ে এই ক্যালকুলেটরের ঘর পূরণ করতে হয়।

আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তথ্যগুলো দিলে আগামী ১০ বছরে হৃৎরোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, তা শতাংশ আকারে দেখানো হয়। মোট স্কোর ১০ শতাংশ বা তার কম হলে পরবর্তী ১০ বছরে ব্যক্তির হৃৎরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে, আর ২০ শতাংশ বা তার বেশি হলে তিনি উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন। এর মাঝামাঝিতে থাকলে মাঝারি ঝুঁকি বিবেচনা করা হয়।

আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের পরবর্তী ১০ বছরে হৃৎরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, তা নিয়মিত যাচাই করে দেখার পরামর্শ দিয়েছে। ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের জন্য তাদের পরামর্শ হলো, চার থেকে ছয় বছর পরপর এই ঝুঁকি যাচাই করা। 

কৃতজ্ঞতা: ডা. শরদিন্দু শেখর রায়
সহকারী অধ্যাপক, হৃৎরোগ বিভাগ
জাতীয় হৃৎরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা

Share.