হুমকির মুখে যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী শৌখিন পণ্যের ব্যবসা

0

ভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে এক বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাজ্যে লকডউনের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির। সম্প্রতি টিকাদান কার্যক্রম জোরদার হওয়া ও করোনা সংক্রমণ কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য রি-ওপেন করতে যাচ্ছে সরকার।

১৩ এপ্রিল করোনা-পরবর্তী দোকানপাট খোলা হবে। এজন্য দোকানিরা তা প্রস্তুত করছেন।

ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুক্তরাজ্যের বাজারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে পণ্য আমদানিতে নানা বিধিনিষেধ ও শুল্কারোপ করে যুক্তরাজ্য সরকার। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যের বাজারে চাহিদা থাকার পরও ঘর সাজানোর প্রাচীন শৌখিন জিনিস বিক্রিতে ভয় পাচ্ছেন আমাদানিকারকরা।

গার্ডিয়ানে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, লন্ডনের নানা শপিং মল ও রাস্তায় বিশেষ করে পর্যটন এলাকায় ভ্যানে করে পসরা সাজিয়ে এসব প্রাচীন শৌখিন পণ্য বিক্রি করেন বিক্রেতারা, যা ফ্রান্স থেকে আমদানি করা। সম্প্রতি ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের ব্যবচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) কার্যকর হওয়ায় পণ্য আমদানিতে বিশেষ করে শৌখিন পণ্য আমদানিতে কঠিন শর্ত আরোপ করে যুক্তরাজ্য। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ব্যবসা বন্ধ থাকার পর আবার ব্যবসা চালু করতে লোকসানের ভয় পাচ্ছেন আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা।

ফার্মহাউস টেবিল থেকে আর্ট ডেকো মিরর ও জৌলুস পোশাক আমদানিকারকরাও ভয় পাচ্ছেন ব্রেক্সিট-পরবর্তী নানা বিধিনিষেধ আরোপ করার জন্য। এক্ষেত্রে তাদের ভ্যান বা ভ্রাম্যমাণ দোকানে পণ্যের পসরা সাজাতে নানা জটিল ডকুমেন্ট দেখাতে হবে।

অ্যাডাম ফ্রিমেনের অন্যতম অংশীদার রেবেকা মেরিল উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, শৌখিন কাগুজে জিনিস আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় তারা বিস্মিত। তিনি বলেন, আগে (ব্রেক্সিটের আগে) আমরা ফ্রান্সের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে এসব পণ্য কিনতাম, যেখানে কোনো ভয় থাকত না। আমরা সরাসরি যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কোনো সমস্যা (শুল্ক) ছাড়া বিক্রি করতাম।

জানা গেছে, এভাবে চলতে থাকলে প্রাচীন এ ক্ষুদ্র শিল্প যুক্তরাজ্যে এমনকি লন্ডন থেকে হারিয়ে যাবে। ইউরোপিয়ানরা এসব পণ্য ইউরোপের অন্য দেশে বিক্রি করবে।

কর আরোপ চালু থাকলে অনেক ক্ষুদ্রব্যবসায়ী, যারা দশকের পর দশক ধরে এসব প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায় জড়িত, তারা ব্যবসার উদ্যোগ হারিয়ে ফেলবে। এসব পণ্য নুি আয়ের মানুষরা বেশি কেনেন। তাই ভ্যাট প্রত্যাহার করা না হলে ব্যবসা করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

যুক্তরাজ্যের কেম্পটন পার্কেল সানবারিতে দীর্ঘদিন ব্যবসা করে আসছেন ইডি ক্রুটেনডেন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের বাজারে এসব পণ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশ কর আরোপ করা ব্যবসার ঐতিহ্য নষ্ট করছে। অ্যাডাম ফ্রিম্যান বলেন, কিছু কিছু পণ্যে ফ্রান্সও পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত করারোপ করে, যেখানে যুক্তরাজ্যে বড় অঙ্কের শুল্কে ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের ব্যবচ্ছেদ ঘটে। এই ব্যবচ্ছেদের ফলে উভয় পক্ষ নিজ নিজ অবস্থানে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে।

Share.