হারমোনিওএস ২ অপারেটিং সিস্টেমের সাতটি নতুন ডিভাইস এনেছে হুয়াওয়ে। বিস্তৃত পরিসরের এ স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ ও ট্যাবলেটে রয়েছে হুয়াওয়ে মেট ৪০ সিরিজের নতুন সংস্করণ ও হুয়াওয়ে মেট এক্স২, হুয়াওয়ে ওয়াচ ৩ সিরিজ এবং হুয়াওয়ে মেটপ্যাড প্রো।
সম্প্রতি চীনে এ অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে আরও উন্মোচন করেছে হুয়াওয়ে ফ্রিবাডস ৪, ওপেন-ফিট অ্যাক্টিভ নয়েস ক্যানসেলেশন (এএনসি) ওয়্যারলেস ব্লুটুথ ইয়ারবাড এবং দুইটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মনিটর – হুয়াওয়ে মেটভিউ ও হুয়াওয়ে মেটভিউ জিটি।
গ্রাহকরা যাতে নানা পরিস্থিতিতে একাধিক ডিভাইসে ঝামেলাহীনভাবে ইন্টেলিজেন্ট অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন, সেজন্য হুয়াওয়ের প্রায় একশো স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটকে হারমোনিওএস ২ অপারেটিং সিস্টেমের আওতায় আনা হবে বলেও হুয়াওয়ে এ অনুষ্ঠানে ঘোষণা করে।
হুয়াওয়ের নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্ট ওয়াচ হুয়াওয়ে ওয়াচ ৩ সিরিজ কার্ভড গ্লাস স্ক্রিনযুক্ত। এতে রয়েছে ৩১৬এল স্টেনলেস স্টিলের কেস। এতে আরও রয়েছে অভিনব থ্রিডি রোটেটিং ক্রাউন, যা নানা স্তরের চাপ অনুভবে সক্ষম এবং ব্যবহারকারীর ইনপুট অনুযায়ী তাকে হ্যাপটিক ফিডব্যাক দিতে পারে। ফলে এ ঘড়ি পরতে যেমন আরামদায়ক, তেমনি এটি চালানোও সহজ। এছাড়া হুয়াওয়ে ওয়াচ ৩ সিরিজের মাধ্যমে ফোন কল করা ও গ্রহণ করা যায় এবং স্মার্টফোনের মতো একই ফোন নম্বর এবং ডেটা ব্যবহার করে গান শোনা যায়। ভ্রমণ, ফিটনেস ও স্বাস্থ্য বিষয়ে বহুমুখী গাইড হিসেবে কাজ করতে এ হারমনিওএস ২ ভিত্তিক ওয়াচ হুয়াওয়ে স্মার্টফোনের সঙ্গে নির্বিঘ্নে সমন্বয় করা যাবে।
নতুন হুয়াওয়ে মেটপ্যাড প্রোতে রয়েছে ৯০ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওযুক্ত আকর্ষণীয় ১২.৬ ইঞ্চির ওএলইডি ফুলভিউ ডিসপ্লে, যা বর্তমান বাজারের সব ট্যাবলেটের মধ্যে সর্বোচ্চ। হুয়াওয়ে মেটপ্যাড প্রো ১,০০০,০০০:১ উচ্চ কনট্রাস্ট রেশিওযুক্ত। এটি ডিসিআই-পি৩ রঙের পরিসর সমর্থন করে। কিরিন ৯০০০ সিরিজের চিপসেটযুক্ত হুয়াওয়ে মেটপ্যাড প্রো চমকপ্রদ পারফরমেন্স নিশ্চিত করবে। হুয়াওয়ে মেটপ্যাড প্রো দিয়ে পিসির সঙ্গে মাল্টি-স্ক্রিন সমন্বয়ও করা যায়। ট্যাবলেটটি মিরর মোডে ড্রইং বোর্ড ও এক্সটেন্ড মোডে মনিটরে পরিণত করা যায়।
হুয়াওয়ে মেটাপ্যাড প্রোর পাশাপাশি একই সঙ্গে উন্মোচন করা হয় দ্বিতীয় প্রজন্মের হুয়াওয়ে এম-পেন্সিল। নির্ভুলভাবে কম সময়ে লেখার জন্য এ নতুন স্মার্ট পেনে প্লাটিনামের প্রলেপ দেয়া নিব ব্যবহার করা হয়েছে। হুয়াওয়ে এম-পেন্সিল ‘ফ্রি-স্ক্রিপ্ট’ সাপোর্ট করে, যা হাতের লেখা রিয়েল টাইমে ডিজিটাল লেখায় রূপান্তর করতে পারে।
‘হারমোনি ওএস’ মাল্টি ডিভাইস ইন্টার্যাকশনকে একটি ডিভাইস নিয়ন্ত্রের মতো সহজ করে। এর মাধ্যমে অনেক ডিভাইস একসঙ্গে চালানোর সময় একটি ডিভাইস চালনার মতো সহজ মনে হয়। এ নতুন কন্ট্রোল প্যানেলটি ‘ড্র্যাগ-অ্যান্ড-ইন্টিগ্রেট’ ফিচারের মাধ্যমে সহজ ও স্বয়ংক্রিয় সংযোগ তৈরি করে, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ডিভাইসের সঙ্গে একে সংযুক্ত করে নিতে পারেন।
‘হারমোনি ওএস ২’- এর নতুন ‘টাস্ক সেন্টার’ ফিচারের মাধ্যমে একটি ডিভাইসে অ্যাপ ইন্সটল করে বাকী ডিভাইসগুলোয় অ্যাপ ইন্সটল করা ছাড়াই সেই অ্যাপ দিয়ে সংযুক্ত থাকা সব ডিভাইসে কাজ করা যাবে। ব্যবহারকারীরা এ সেবাটি তাদের ইচ্ছামত যেকোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে নিতে পারবেন।
হুয়াওয়ে ছাড়াও অন্য ডিভাইস স্মার্ট ফিচারের আওতাভুক্ত করতে হুয়াওয়ে হাইলিংককে আপগ্রেড করে ‘হুয়াওয়ে ওএস কানেক্ট’ করা হয়েছে। ঘরের স্মার্ট ডিভাইসগুলো এখন হাতের এক চাপেই মোবাইল ফোনের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে। ব্যপারটা এতোটাই সহজ হবে যে, মোবাইল ফোনে স্পর্শ করলেই হুয়াওয়ে ওএস কানেক্ট সাপোর্ট করা মিডিয়া ওভেনে আপনি খাবার তৈরি করতে পারবেন। পাশাপাশি এর মাধ্যমে হায়ারের ফ্রিজগুলোকে খাবারের ধরণ অনুয়ায়ী তাপমাত্রা নির্ধারণ করে নিরাপদ রাখা যায়।
হারমোনি ওএস ২ সর্বশেষ প্রজন্মের ইএমইউআইয়ের চেয়েও আরো সাবলীল কাজ করে। হারমোনি ওএস ২ মোবাইল ফোন ৩৬ মাস ব্যবহারের পরও নতুন ফোনের মতো কাজ করে। এমনকি অল্প স্টোরেজ থাকা সত্ত্বেও এটি একই গতিতে ব্যবহার করা যায়।
ফোনটি একসঙ্গে চলমান অ্যাপগুলোকে ব্যকগ্রাউন্ডে রেখে দেয়। ফলে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যকগ্রাউন্ড থেকে বের করে বাকী কাজ সম্পন্ন করা যায়। ব্যবহারকারীরা যেকোনো অ্যাপ বা পেজে সর্বশেষ যেখানে কাজ করেছেন, অনেক অ্যাপ চালু থাকা সত্ত্বেও তারা পরবর্তীকালে এসে ঠিক সেখান থেকেই কাজ শুরু করতে পারবেন। হারমোনি ওএস ২ -তে আপগ্রেড হওয়ার পর হুয়াওয়ে মেট ৪০ প্রো ব্যবহার করে এখন নির্বিঘ্নে টানা ৫.১ ঘণ্টা গেম খেলা যাবে।
হুয়াওয়ে কনজ্যুমার বিজনেস গ্রুপের সিইও ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রিচার্ড উ বলেন, ‘আমরা এমন একটি বিশ্বে বসবাস করি যেখানে সবাই সবার সঙ্গে সংযুক্ত। আমরা সবাই ও সব ডিভাইস সম্পূর্ণ কানেক্টেড। এক্ষেত্রে একটি অনবদ্য হারমোনি ওএস ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে আমরা আরও অংশীদার ও ডেভেলপারদের সঙ্গে কাজ করতে চাই, যার মাধ্যমে আমরা গ্রাহকদের আরো ভাল অভিজ্ঞতা, পণ্য ও সেবা দিতে পারি।’
গ্রাহকদের আরও সুবিধাজনক, সাবলীল ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দিতে স্মার্ট ডিভাইসের পরবর্তী প্রজন্মের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে হারমোনিওএস, নানা ডিভাইস সংযুক্ত ও সমন্বয় করার জন্য একটি কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে। এটি একক সিস্টেমের মাধ্যমে সব ধরণের ডিভাইসের প্রয়োজন অনুযায়ী ডিস্ট্রিবিউশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। হারমোনিওএস আগের স্বতন্ত্র ডিভাইসগুলোকে একটি সম্মিলিত ও সামগ্রিক সুপার ডিভাইসে পরিণত করে, যা ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে ডিভাইসের সক্ষমতা অর্জনের জন্য সব হার্ডওয়্যার ইন্টিগ্রেট করে। নানা ডিভাইসে অ্যাপের উপযোগিতার বিকাশ আগের চেয়ে সহজতর করে তোলার মাধ্যমে হারমোনিওএস ডেভেলপারদের বিভিন্ন অ্যাপ ক্রস-প্ল্যাটফর্ম ডেভেলপমেন্ট ও ক্রস-ডিভাইস ডেপ্লয়পমেন্ট সুবিধা দেয়।
গ্রাহকদের অত্যাধুনিক সুবিধাদানে হারমোনি ওএস ২ এর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চীনে ইতোমধ্যে ১০০ হুয়াওয়ে ডিভাইস হারমোনি ওএস ২-এ আপগ্রেড করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ডিভাইসগুলোর মধ্যে রয়েছে হুয়াওয়ে মেট ৪০ সিরিজ, মেট ৩০ সিরিজ, পি৪০ সিরিজ, মেট এক্স টু, নোভা ৮ সিরিজ ও মেটাপ্যাড প্রো সিরিজ।
যে ব্যবহারকারীরা দ্রুত এ নতুন ওএস অভিজ্ঞতা নিতে চান, তারা হুয়াওয়ে ক্লাব বা মাই হুয়াওয়ে অ্যাপে আবেদন করতে পারেন। অথবা তারা চীনে হুয়াওয়ের যেকোনো ৬৬ অফলাইন স্টোরে হারমোনি ওসএস এক্সপেরিয়েন্স অফিসার প্রোগ্রামে নিবন্ধন করতে পারেন।
হুয়াওয়ে
হুয়াওয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য।
নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সল্যুশন পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে, যা গ্রাহকদের টেলিকম ও এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, ডিভাইস ও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে সুবিধা দেয়। হুয়াওয়ে ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে, যা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। এক লাখ ৯৪ হাজারের বেশি কর্মী নিয়ে বিশ্বব্যাপী টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে এগিয়ে চলেছে।
হুয়াওয়ে গত ২১ বছর ধরে বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি শিল্প, টেলিকম অপারেটর ও স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে তথ্য-প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এছাড়া সিএসআর কর্মসূচীর মাধ্যমে সামাজিক ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে হুয়াওয়ে।
ওয়েবসাইট: www.huawei.com
ফেসবুক: https://www.facebook.com/HuaweiTechBD/
টুইটার: http://www.twitter.com/Huawei
ইউটিউব: http://www.youtube.com/Huawei
লিংকডইন: http://www.linkedin.com/company/Huawei ♦