তিন দশকের মধ্যে চীনের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিব্বত সফর করেছেন প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং। রাজনৈতিকভাবে অস্থির অঞ্চলটিতে গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ছিলেন শি। সফর শেষ হওয়ার পর এ খবর প্রকাশ করে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিসিটিভি।
১০ বছর আগেও একবার তিব্বত পরিদর্শন করেছিলেন শি চিন পিং। তবে সে সময় চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
সিসিটিভির প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, নিজের বিমান থেকে নামছেন শি চিন পিং। চীনের জাতীয় পতাকা হাতে তাকে স্বাগত জানায় আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত একদল ব্যক্তি।
বেইজিং থেকে তিব্বতের দক্ষিণ-পূর্বে অবতরণ করে শিকে বহনকারী বিমান। সেখান থেকে ট্রেনে করে রাজধানী লাসায় পৌঁছান প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা ও নির্বাসিত দালাই লামার বাসভবন পোটালা প্যালেসে যান তিনি।
তিব্বতবিষয়ক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর টিবেট গত বৃহস্পতিবার জানায়, লাসার নগরবাসীরা শহরে ‘লক্ষণীয় কর্মকাণ্ড ও তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে’ বলে জানিয়েছিলেন। তখনও শিয়ের সফরের বিষয়টি গোপন ছিল।
চীনের বিরুদ্ধে বৌদ্ধ-অধ্যুষিত প্রত্যন্ত তিব্বতে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ রয়েছে। যদিও অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বেইজিংয়ের দাবি, চীনের শাসনব্যবস্থার অধীনে অঞ্চলটির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
শিয়ের সদ্যসমাপ্ত তিব্বত সফরের আগে অঞ্চলটিতে চীনের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জিয়াং জেমিন ১৯৯০ সালে পা রেখেছিলেন।
বেইজিং জানিয়েছে, তিব্বতের সংস্কৃতি রক্ষায় কী কী হয়েছে, সেখানকার ধর্ম ও আদিবাসীবিষয়ক কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয়ে নিজের জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ করেই অঞ্চলটি পরিদর্শন করেছেন শি।
নির্বাসিত অনেক তিব্বতির অভিযোগ, তাদের সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিতে ও ধর্মীয় স্বাধীনতা দমন করতে চায় বেইজিং। এর প্রতিবাদে আত্মাহুতিসহ নানা কায়দায় অসংখ্যবার বিক্ষোভ হয়েছে তিব্বতে।
এসব কারণে তিব্বত ইস্যু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বেইজিংয়ের জন্য বেশ স্পর্শকাতর একটি বিষয়।
তিব্বতে অস্থিতিশীলতির ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। কিছু সময় অঞ্চলটিতে স্বাধীন শাসনব্যবস্থা থাকলেও বাকি সময় চীন ও মঙ্গোলিয়ার বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজবংশ তিব্বত শাসন করেছে।
১৯৫০ সালে তিব্বত নিজেদের দাবি করে অঞ্চলটিতে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করে চীন। কিছু অংশ তখন স্বায়ত্তশাসিত তিব্বত অঞ্চল হয়; বাকি অংশ সীমান্তবর্তী চীনের বিভিন্ন প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়।
তিব্বতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নিপীড়নের অংশ হিসেবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয় বলে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ♦