শিগগির কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ, ৭৮ প্রতিষ্ঠান অ্যান্টিজেন টেস্টের আওতায়

0

ক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ও ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড টিকার দ্বিতীয় ডোজের জন্য যারা অপেক্ষায় রয়েছেন তারা শিগগির টিকা পাবেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

আজ রবিবার অধিদফতর আয়োজিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।

তিনি বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের টিকার অপেক্ষায় যারা রয়েছেন তাদের আমরা বলব, খুব দ্রুতই এটার অবসান ঘটবে। টিকার চালান পেয়ে গেলেই দ্বিতীয় ডোজের জন্য সুসংবাদটি আমরা দিতে পারব।

প্রসঙ্গত, দেশে গত ৭ ফেরুয়ারি জাতীয়ভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয় এই কোভিশিল্ড টিকার মাধ্যমে।

ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে সরকার তিন কোটি ডোজ টিকার জন্য চুক্তি করলেও ভারত টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে সেরামের সঙ্গে চুক্তির মাত্র ৭০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড পায় বাংলাদেশ।

ভারত সরকার দুই বারে বাংলাদেশকে এ টিকা উপহার দেয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ কোভিশিল্ড পেয়েছে ১ কোটি দুই লাখ ডোজ। সে অনুযায়ী এখন মাত্র কোভিশিল্ডের ৮২ হাজার ৫৫৯ ডোজ টিকা অবশিষ্ট রয়েছে বলে গতকাল ১৭ জুলাই জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় রয়েছে।

এদিকে ব্যাপকভাবে কভিড-১৯ সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য সারাদেশের ৭৮টি হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও গবেষণাগারকে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠান নমুনা পরীক্ষার ফি বাবদ ৭০০ টাকা করে আদায় করতে পারবে।

বাড়িতে গিয়ে নমুনা পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত ৫০০ টাকা করে দিতে হবে। তবে একটি বাড়িতে গিয়ে একাধিক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করালেও অতিরিক্ত চার্জ ৫০০ টাকার বেশি হবে না।

আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন মিঞার অনুমোদন পাওয়া হাসপাতালগুলোকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।

ডা. ফরিদ মিয়া বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠান অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল। আমরা যেসব শর্ত দিয়েছিলাম তারা সেগুলো পূরণ করেছে। এ কারণে আমরা অনুমোদন দিয়েছি।’

অ্যান্টিজেন টেস্টে নাক কিংবা মুখবিহ্বরের শ্লেষ্মা ব্যবহার করা হয়, আরএনএ বিশ্লেষণের পরিবর্তে এখানে ভাইরাসের প্রোটিন শনাক্ত করা হয়। আবার রক্ত পরীক্ষা করেও অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি শনাক্ত করা যায়।

গত বছর দেশে নতুন কভিড-১৯ সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর শুধু আরটি-পিসিআর পরীক্ষাই চলত। গত বছর ৫ ডিসেম্বর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করে সরকার। সরকার এ পরীক্ষাটি বিনা খরচে করে দিচ্ছে।

গত ১১ মার্চ স্থানীয় সরকার ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি স্টেটের নীতিমালা অনুমোদন করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।

১ জুন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে কভিড-১৯ নির্ণয়ে অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের নামসহ খরচ নির্ধারণের জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে প্রস্তাব পাঠায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমুহ) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞার স্বাক্ষরে পাঠানো ওই প্রস্তাবে বলা হয়, কভিড মহামারির সময় আরটিপিসিআরের পাশাপাশি অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা খুবই জরুরি। সরকারিভাবে ১০০ টাকায় অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি খাতে এই টেস্ট চালু করা খুবই জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন আছে বায়োসেন্সর ও প্যানবায়ো নামে দুটি কিটের। এসব কিটের আনুমানিক দাম ৫০০ টাকা। এই দামের সঙ্গে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের অন্যান্য খরচসহ পরীক্ষাটির সর্বোচ্চ মূল্য ৭০০ টাকা করা নির্ধারণ করা যেতে পারে।

Share.