নাগরিকের জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালগুলো বাধ্য বলে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। কোনো হাসপাতাল অসম্মতি জানাতে পারবে না বলেও জানানো হয়েছে।
পরপর তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে এক রোগীর মৃত্যু ও এক প্রসূতির ক্লাবে সন্তান প্রসবের ঘটনায় করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ এসেছে।
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার আল্পনা নামের এক প্রসূতি প্রসব বেদনা নিয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে গেলে তাকে সেবা দেয়া হয়নি। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। পথে স্থানীয় একটি ক্লাবে সন্তান প্রসব করেন তিনি।
আর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে পর পর তিন হাসপাতালে ফিরিয়ে দিলে পথেই তার মৃত্যু হয়। এ রকম বেশ কয়েকটি ঘটনা সংযুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও অ্যাকাডেমি অব ল অ্যান্ড পলিসি (আলাপ) যৌথভাবে রিট করে।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট আদেশে বলেছেন, অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে যখনই হাসপাতাল বা ক্লিনিক অথবা চিকিৎসকদের কাছে আনা হবে, তাৎক্ষণিক তার জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে।
যদি কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার ব্যবস্থা না থাকে, সে ক্ষেত্রে জরুরি সেবা রয়েছে, নিকটস্থ এমন হাসপাতালে পাঠাতে হবে তাকে।
জরুরি চিকিৎসা সেবা বিভাগ রয়েছে এমন সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের তালিকা আগামী তিন মাসের মধ্যে চেয়েছেন আদালত।
হাসপাতাল ও ক্লিনিকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শারমিন আক্তার ও খন্দকার নীলিমা ইয়াসমিন।
রাশনা ইমাম বলেন, ‘হাইকোর্টের এ আদেশের ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুমূর্ষু রোগীকে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে বাধ্য থাকবে।’
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরে মামলাটির পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী বছর ১৮ জানুয়ারি তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন আদালত। ♦