রেকর্ড গড়ল স্পেসএক্স, এক মিশনে ১৪৩ মহাকাশযান

0

পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেটের এক মিশনে ১৪৩ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করল ইলন মাস্কের স্পেসএক্স। এর মধ্য দিয়ে এক মিশনে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক মহাকাশযান উৎক্ষেপণের রেকর্ড বলে দাবি করেছে মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।

গতকাল রোববার (২৪ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ কেনাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় যাত্রা করে স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেট।

ফ্যালকন ৯ রকেটটি পুনঃব্যবহারযোগ্য। এটি ১৩৩ বাণিজ্যিক ও সরকারি স্যাটেলাইটের পাশাপাশি ১০ স্টারলিংক স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে এদিন।

স্পেসএক্সের ‘স্মলস্যাট রাইডশেয়ার প্রোগ্রাম’-এর অংশ হিসেবে এ অভিযান পরিচালনা করেছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। ছোট স্যাটেলাইট পরিচালনা সংস্থাগুলোকে কক্ষপথে স্যাটেলাইট পাঠানোর ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী যাত্রার সুযোগ করে দেয় ‘স্মলস্যাট রাইডশেয়ার প্রোগ্রাম’।

এর আগে প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য রকেট উৎক্ষেপণ একদিন পেছায় স্পেসএক্স।

২২ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি টুইট করেন, স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক- আগামীকাল অনেক গ্রাহকের জন্য বেশ কয়েকটি ছোট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করছি। ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য কম খরচে কক্ষপথে প্রবেশাধিকার দিতে পেরে আনন্দিত।

স্পেস এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজিস করপোরেশন
প্রতিষ্ঠানটি সংক্ষেপে স্পেসএক্স নামে পরিচিত। মার্কিন মহাকাশযান প্রস্তুতকারক ও মহাকাশ বিষয়ক সেবা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এর প্রধান কার্যালয় ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের হথর্ন নগরীতে।

মহাকাশ যাত্রা ও ভ্রমণ সহজলভ্য করার পাশাপাশি মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসের স্বপ্ন নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক ২০০২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।

শুরু থেকে স্পেসএক্স ফ্যালকন ও ড্রাগন মহাকাশযান বানাচ্ছে। এগুলো বর্তমানে পৃথিবীর কক্ষপথে “পে-লোড” (যন্ত্রপাতি বা কৃত্রিম উপগ্রহ) পৌঁছে দিচ্ছে।

ব্যক্তি মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠান বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম মহাকাশে নভোচারী পাঠায়। ঘটনাটি নাসার জন্য স্বস্তির। কেননা নাসার নিজস্ব শাটলযান যুগ শেষ হওয়ার পর কোন প্রতিষ্ঠানের নভোচারী বহন করে তা নিয়ে উদ্যোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল প্রতিযোগিতা। এতে সফল স্পেসএক্স। প্রতিষ্ঠানটি প্লেন নির্মাতা বোয়িং, অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন, ভার্জিন গ্রুপ প্রধান স্যার রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্যালাকটিককে পেছনে ফেলে বেসরকারি মহাযান হিসেবে মহাকাশে চার নভোচারী পাঠায়।

এর আগে প্রায় তিন দশক ধরে নাসা নিজস্ব শাটল যান ব্যবহার করেছে মহাশূন্যে অভিযান পরিচালনায়। এরপর নাসাকে দ্বারস্থ হতে হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার কাছে, তাদের সয়ুজ যান ব্যবহারের জন্য।

তখন উৎক্ষেপণ প্রসঙ্গে বর্তমান প্রেসিডেন্টে জো বাইডেন বলেন, এটি বিজ্ঞানের শক্তির স্বাক্ষ্য দিচ্ছে।

শুধু তা-ই নয়, মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠাতে চান ইলন মাস্ক। ২০৫০ সালের মধ্যে ১০ লাখ মানুষকে মঙ্গলে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

অনেক টুইট বার্তায় লাল গ্রহটিতে মানব বসতি নির্মাণের কথা বলেন স্পেসএক্স প্রধান। প্রতি বছর কয়েক মেগাটন কার্গো মঙ্গলে নেবে তার রকেট। ফলে এই শতকের মাঝামাঝি মানব বসতির জন্য প্রস্তুত হবে গ্রহটি। একটি টুইটে মাস্ক বলেন, “স্টারশিপের লক্ষ্য প্রতিদিন গড়ে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করা, এতে প্রতি বছর এক হাজারের বেশি ফ্লাইট পাঠানো হবে, প্রতি ফ্লাইটে ১০০ টনের বেশির কার্গো যাবে। ফলে প্রতি বছর এক মেগাটন কার্গো পাঠানো হবে।”

Share.