সর্বজনীন সামাজিক নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় দু’দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াসির আহসানের আদালত এ অনুমতি দেন।
এর আগে, সাইফুল ইসলামকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপপরিদর্শক সোহেল রানা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।
আজ দুপুরে সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে (সাইফুল ইসলাম) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাইফুল ইসলামের নামে ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মাল্টিলেভেল মার্কেটিং নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, রিং আইডি প্রাথমিকভাবে একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যাত্রা করে। পরে তারা এ প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন সার্ভিস যোগ করে মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করে। এ সব সার্ভিসের ভেতরে রয়েছে বৈদেশিক বিনিয়োগ, কমিউনিটি জবসসহ বিভিন্ন সার্ভিস, যার আড়ালে এ আমানত সংগ্রহের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিপুল পরিমাণ জনগণ এ খাতে বিনিয়োগ করে। এর আগেও তাদের করোনাকালে ডোনেশনের মাধ্যমে জনগণের কাছে থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সন্দেহ করা হয়েছিল।
বর্তমানে সন্দেহের তালিকায় থাকা বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের মতো তারাও অস্বাভাবিক ডিসকাউন্টে নানা পণ্য বিক্রি এবং ক্রেতাদের কাছে থেকে ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন পরিচালনা করছিল।
তিনি আরও বলেন, রিং আইডিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত একজন ভুক্তভোগী সম্প্রতি ভাটারা থানায় হাজির হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে রিং আইডির ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয়ে ১৫ জনকে আসামি করেন। সিআইডির শিডিউলভুক্ত হওয়ায় মামলাটির তদন্ত শুরু করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। তদন্তের ধারাবাহিকতায় সাইবার পুলিশ সেন্টার শুক্রবার রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
আগে থেকে সাইবার পুলিশ সেন্টার নজরদারিতে রেখেছিল রিং আইডিকে। সন্দেহজনক কাজ দেখে সিআইডি পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) রিং আইডির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের অনুরোধ জানায়। বিএফআইইউ তাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।
অন্যদিকে, নিজস্ব অনুসন্ধানে সাইবার পুলিশ সেন্টার জানতে পেরেছে, কমিউনিটি জবস খাতে উপার্জনের লোভ দেখিয়ে শুধু মে মাসে রিং আইডি ২৩ দশমিক ৯৪ কোটি, জুনে ১০৯ দশমিক ৯৩ কোটি ও জুলাইয়ে ৭৯ দশমিক ৩৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।
আইনি প্রক্রিয়া চলার সময় যেন তারা অবৈধভাবে অর্থ দেশের বাইরে পাচার করতে না পারে, সে জন্য ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার অনুরোধও জানানো হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। ♦