যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে নাগরিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের দেউলিয়া হওয়ার আবেদন বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে গত বছর দেশটিতে দেউলিয়াত্বের আবেদন ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়ার হওয়ার জন্য ৪ লাখ ৪৫ হাজার ১৮৬টি আবেদন পড়েছে।
ব্যক্তিগত দেউলিয়াত্বের তুলনায় চ্যাপটার-১১-এর অধীন বাণিজ্যিক আবেদন বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। বাণিজ্যিক দেউলিয়াত্বের আবেদন ৭২ শতাংশ বেড়েছে, ব্যক্তিগত দেউলিয়াত্বের আবেদন বেড়েছে ১৮ শতাংশ। এপিক এএসিইআর নামের একটি প্রতিষ্ঠান এ তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করেছে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়াত্বের আবেদন বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, উচ্চ নীতি সুদহার, ঋণ দেওয়ার নীতিমালা কঠোরতর হওয়া আর মহামারির সময়ের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি শেষ হওয়াকে।
২০২২ ও ২০২৩ সালজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেড ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করায় ঋণ করার ব্যয় বেড়েছে। এতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সুদহার বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেছে। এ কারণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের পক্ষে নতুন ঋণ নেওয়া কঠিন হয়েছে।
এছাড়া কোভিড-১৯ মহামারিতে দেশটির সরকার যেসব আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি নিয়েছিল, সেগুলো একের পর এক শেষ হয়েছে। ফলে ব্যক্তি ভোক্তা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান—উভয়ের সুরক্ষা কমে গেছে।
গত ডিসেম্বরে দেউলিয়াত্বের আবেদন আগের মাস নভেম্বরের সাপেক্ষে কিছুটা কমেছে। ডিসেম্বরে মোট ৩৪ হাজার ৪৪৭টি দেউলিয়াত্বের আবেদন জমা পড়েছে, নভেম্বরে যা ছিল ৩৭ হাজার ৮৬০টি। তারপরও ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দেউলিয়াত্বের আবেদন বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
২০২৩ সালে দেউলিয়াত্বের আবেদন বাড়লেও ২০১৯ সালের তুলনায় তা অনেক কম। সে বছর মোট ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৮১৬টি দেউলিয়াত্বের আবেদন জমা পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৪ সালেও দেউলিয়াত্বের আবেদন বাড়বে।
এপিক এএসিইআরের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল হান্টার বলেন, ২০২৩ সালে দেউলিয়াত্বের আবেদন বৃদ্ধির বিষয়টি অপ্রত্যাশিত নয়। মহামারির সময় দেওয়া প্রণোদনা শেষ হয়ে যাওয়া, উচ্চ সুদহার, ঋণ পরিশোধ কমে যাওয়া ও গৃহঋণ ঐতিহাসিক উচ্চতায় উঠে যাওয়ায় ২০২৪ সালেও দেউলিয়াত্বের আবেদন বাড়বে বলে ধারণা করি। ♦