শীতকালে প্রায় সবারই পরিকল্পনা থাকে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার। এ ভ্রমণ পথে খাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে অনেকে ভ্রমণের সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দল বেঁধে কোথাও গেলে একজন অসুস্থ হলে অন্যদেরও অনন্দ অনেকটা ম্লান হয়ে যায়। অথচ কিছু সাধারণ বিষয়ের দিকে নজর দিয়ে আমরা এসব ঝামেলা এড়াতে পারি।
আমাদের দেশে পানিবাহিত রোগ তুলনামূলক অনেক বেশি হয়। টাইফয়েড, জন্ডিস, আমাশয় পরিচিত পানিবাহিত রোগ। যাত্রাপথে বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন কিন্তু খুব বেশি পানি সঙ্গে নেওয়া সম্ভব হয় না। এজন্য সঙ্গে নিতে পারেন হ্যালোজেন ট্যাবলেট। এক লিটার পানিতে একটা ট্যাবলেট ছেড়ে দিয়ে ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে পাবেন বিশুদ্ধ পানি।
ফিটকিরিও একসময় এভাবে ব্যবহৃত হতো। জরুরি প্রয়োজনে ফিটকিরিও ব্যবহার করতে পারেন। মিনারেল ওয়াটার কিনতে ভালো কোম্পানির বোতল খুঁজুন, দেখুন মুখের সিল ঠিকমতো লাগানো রয়েছে কিনা।
আমাদের দেশের পর্যটকদের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে সবখানে নিরাপদ খাবারের নিশ্চয়তা নেই। খাবারের হোটেলগুলোর মান সব এলাকায় ভালো নয়। শহরের মানুষদের জন্য অনেক খাবার বিপদ ডেকে আনতে পারে। খোসা ছাড়ানো ফল বা সালাদ খেতে সাবধান থাকুন, সন্দেহ হলে সালাদ বাদ দিন। খোসাসহ ফল যেমন কলা, লেবু অনেক নিরাপদ খাবার যাত্রাপথে।
ঠাণ্ডা খাবারে বিপদ বেশি। খাবার গরম গরম পরিবেশন করলে জীবাণুর আক্রমণ থেকে বেশি সুরক্ষা পাওয়া যায়। গরম চা-কফিতে তেমন বিপদ হবে না।
অনেকে ডিম সিদ্ধ কিনে খান ভ্রমণে। ডিম খেলে নিজে খোসা ছাড়িয়ে নেবেন। খোসা ছাড়ানো শুধু সিদ্ধ ডিম কিনবেন না।
যদি ডাব খান তবে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ডাব কাটিয়ে নেবেন। ময়লা স্ট্র বাদ দিয়ে ডাবের পানি নিজের বোতলে ঢেলে নিন।
বোতলজাত পানীয় সাধারণত নিরাপদ, তবে পানের আগে দেখে নিন বোতলের মুখটা পরিষ্কার আছে কিনা।
ভ্রমণে হাত পরিষ্কার রাখা বেশ ঝামেলার। ময়লা হাতেই অনেকে খাবার খেয়ে ফেলতে পারে। খাবার খাওয়ার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাতে দিয়ে হাত শুকিয়ে নিন।
প্যাকেটজাত শুকনো খাবারে ঝামেলা অনেক কম। প্যাকেটের বিস্কুট, কেক ইত্যাদি খাওয়া অনেকটা নিরাপদ। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ কিনা দেখে নিন, অজানা কোম্পানির থেকে পরিচিত কোম্পানির খাদ্য সামগ্রী কেনা ভালো।
দোকানের খোলা সিঙ্গারা, সমুচা অথবা চটপটি ফুচকা, ঝালমুড়ি যতোই মুখরোচক হোক এগুলো খাওয়া যাবে না।
শেষে চিরপরিচিত একটা উপদেশ বাণী না বললে নয়, যাত্রাপথে অপরিচিত কারো দেওয়া কিছু খাবেন না।
খাবার ছাড়া বাঁচা সম্ভব নয় আবার খাবারের কারণে হতে পারে মারাত্মক সমস্যা। তাই ভ্রমণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের যাত্রা হোক আনন্দময়। ♦