বিনোদন ডেস্ক: ইরফান খান হেরে গেলেন রোগের কাছে। থেমে গেলেন চুয়ান্নতে। আজ সকালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
ইরফান খানের মুখপাত্র এ খবর নিশ্চিত করেছেন। খবর বিবিসি।
মুখপাত্র লিখেছেন, ‘আমি নিজেকে সমর্পণ করে দিলাম। এই কথাগুলো ইরফান বলেছিলেন ২০১৮ সালে, যখন তাঁর ক্যানসারের কথা প্রকাশ্যে আসে এবং তাঁর লড়াই শুরু হয়। আজকে আমরা জানাচ্ছি যে, অভিনেতা ইরফান খান চলে গেলেন। ইরফান মনের জোরে চলতেন, সাহসী মানুষ ছিলেন, শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। তাঁর সংস্পর্শে যেসব মানুষ এসেছেন, তাঁদের সব সময় উদ্বুদ্ধ করতেন।’
গতকাল ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। মাত্র তিন দিন আগে ইরফান খানের মা পরলোকগমন করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তাঁর মা সাইদা বেগম। শনিবার রাতে ভারতের জয়পুরে তিনি মারা যান। মায়ের মৃত্যুর এ সময়ে পাশে থাকতে পারেননি ইরফান খান, শেষ দেখাও হয়নি। তবে ভিডিওকলে মায়ের দাফন কার্যক্রম দেখেছেন দূর থেকে।
ইরফানের জন্ম রাজস্থানের জয়পুরে। তাঁর পরিবার এখনো সেখানেই থাকে। সেখান থেকেই দিল্লিতে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় পড়তে আসেন। এরপর পাকাপাকিভাবে যোগ দেন বলিউডে।
২০১৮ সালে ইরফানের ‘কারওয়াঁ’ মুক্তি পেয়েছিল। তার আগে থেকেই তিনি নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমারে ভুগছিলেন। তাই ‘কারওয়াঁ’র প্রচারেও ছিলেন না ইরফান। লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে খানিক সুস্থ হয়ে তিনি ‘আংরেজি মিডিয়াম’ এ কাজ করেন।
অসুস্থতা তাঁর জীবনযাপন বদলে দিয়েছে। সিনেমা দেখা আর বই পড়ার অভ্যাস ছিল ইরফানের।
১৯৬৭ সালে জন্মেছিলেন অভিনেতা ইরফান খান। অস্কার মনোনীত ছবি ‘সালাম বোম্ব’–এর সঙ্গে ১৯৮৮ সালে রুপালি পর্দায় পথচলা শুরু করেন অভিনেতা। এর আগে টেলিভিশন ও থিয়েটারে কাজ করেছেন ইরফান খান। হিন্দির পাশাপাশি হলিউড ছবিতেও অভিনয় করেছেন অভিনেতা। সাড়ে তিন দশক অনেক কালজয়ী ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন এ অভিনেতা। তাঁর অভিনীত কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি হলো ‘মকবুল’, ‘হাসিল’, ‘পান সিং তোমার’, ‘পিকু’, ‘হিন্দি মিডিয়াম’ ইত্যাদি। ‘স্লামডগ মিলেনিয়ার’, ‘লাইফ অব পাই’, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’, ‘দ্য আমেজিং স্পাইডারম্যান’–এর মতো হলিউড ছবিতে অভিনয় করেছেন ইরফান খান। তাঁর অকালপ্রয়াণে শোকের ছায়া বিনোদনজগতে। স্লামডগ মিলিয়নিয়ারে অভিনয়ের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন।
পান সিং তোমার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ২০১৩ সালে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার অর্জন করেন। চলচ্চিত্রটি একজন অ্যাথলেটের জীবনী নিয়ে নির্মিত, যিনি পরবর্তী সময়ে ডাকাত হয়েছিলেন।
ইরফান খান অভিনয় করেছিলেন বাংলাদেশের পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’ ছবিতে।
সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন যিনি ‘পিকু’ চলচ্চিত্রে তার সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তিনি এক টুইটারে বলেন, “চলচ্চিত্র দুনিয়ার এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা…বিনীত সহকর্মী…কর্মঠ কর্মী… খুব জলদি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন…অনেক বড় শূন্যতা তৈরি করে দিয়ে চলে গেলেন।”
বলিউড অভিনেত্রী রাভিনা ট্যানডন এক টুইটে বলেছেন, “চমৎকার একজন সহ-অভিনেতা, অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন অভিনেতা ও একজন সুন্দর মনের মানুষ ছিলেন তিনি।” ♦
