যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেকে পড়া নিজের লেখা কবিতায় ‘ঐক্য ও একতার’ ডাক দিয়েছেন তরুণ কবি আমান্ডা গোরম্যান। দেশটিতে প্রেসিডেন্টের অভিষেকে নিজের কবিতা পড়া কবিদের মধ্যে তিনিই এখন সর্বকনিষ্ঠ।
২৩ বছর বয়সী এ তরুণী ওয়াশিংটন ডিসিতে অভিষেকে উপস্থিত ব্যক্তি ও তাদের পাশাপাশি টেলিভিশনে যোগ দেয়া বিশ্বের অসংখ্য মানুষকে নিজের লেখা কবিতা ‘দি হিল উই ক্লাইম্ব’ শুনিয়েছেন।
তার পাঁচ মিনিটের কবিতা শুরুই হয়েছে, “যখন দিন আসে, আমরা নিজেদের কাছে জানতে চাই, এই শেষ না হওয়া ছায়ায় কোথায় আমরা আলো খুঁজে পাবো?”
চলতি মাসে ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার প্রসঙ্গও উঠে আসে আমান্ডার কবিতায়। “আমরা এমন শক্তি দেখেছি, যা আমাদের দেশকে সবার মধ্যে বিলিয়ে না দিয়ে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবে, গণতন্ত্রকে বিলম্বিত করাতে পারলে দেশকে ধ্বংস করে দেবে।”
“এমন চেষ্টা প্রায় সফলও হয়েছিল। গণতন্ত্র হয়তো সময়ে সময়ে দেরিতে আসতে পারে, কিন্তু একে কখনোই স্থায়ীভাবে পরাজিত করা যাবে না,” নিজের কবিতায় বলেছেন আমান্ডা।
কবিতায় আমান্ডা নিজেকে পরিচয় করিয়ে দেন এইভাবে, “হাড্ডি-চর্মসার কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে যার স্বপ্ন প্রেসিডেন্ট হওয়ার। যার পূর্বপুরুষ ছিল দাস ও বড় হয়েছে একাকী মা-র (সিঙ্গেল মাদার) কাছে।”
২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ পোয়েট লরিয়েট’ হওয়া আমান্ডা বাইডেনের অভিষেকে কবিতা পড়ে রবার্ট ফ্রস্ট, মায়া অ্যাঞ্জেলু, মিলার উইলিয়ামস, এলিজাবেথ আলেক্সান্ডার ও রিচার্ড ব্লাঙ্কোর মতো কবিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করলেন। তারা সবাই কোনো না কোনো প্রেসিডেন্টের অভিষেকে আবৃত্তি করেছিলেন।
“আমি সত্যিই আমার শব্দগুলোকে ঐক্য, সহযোগিতা ও একতার বিষয় করতে চাই,” নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগে এমনই বলেন আমান্ডা।
‘দি হিল উই ক্লাইম্ব’ দিয়ে বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান মাতানো আমান্ডা ও তার কবিতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা চলছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। আমান্ডা জানান, যখন তাকে বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে কবিতা পড়ার আমন্ত্রণ জানানো হয় তখন তিনি ‘চিৎকার করে উঠেছিলেন, মাথা চক্কর দিচ্ছিল’। উত্তেজনা, আনন্দ, সম্মানের পাশাপাশি ‘খানিকটা আতঙ্কিতও হয়েছিলেন’ তিনি। কবিতা শেষ করতে না পারার আশঙ্কা চেপে বসেছিল। যে বিশাল কাজের ভার বর্তেছে, তা ‘ঠিকঠাকমতো উৎরে যেতে পারবো তো’- এই উৎকণ্ঠা অস্থির করে তুলেছিল তাকে। তবে সে আশঙ্কা গুঁড়িয়ে দিয়ে অনুষ্ঠান মাতিয়েছেন আমান্ডা। তার কবিতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা চলছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে।
১৯৯৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলসে জন্ম নেয়া আমান্ডা ১৬ বছর বয়সে রাজ্যটির ‘ইয়ুথ পোয়েট লরিয়েট’ হন। তিন বছর পর হার্ভার্ডে সমাজবিজ্ঞান পড়ার সময় হন ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ পোয়েট লরিয়েট’। ২০১৫ সালে তার প্রথম বই ‘দি ওয়ান ফর হুম ফুড ইজ নট এনাফ’ প্রকাশিত হয়। ♦
