বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটের সদস্য হলো

0

ন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটে (আইভিআই) আনুষ্ঠানিক যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র আরও জানিয়েছে, আইভিআইতে বাংলাদেশের যোগদান উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিসহ কোরিয়ায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও আইভিআই সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধি সরাসরি এবং অনলাইনে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম শুভেচ্ছামূলক ভিডিও বার্তা পাঠান।

দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

আইভিআইয়ের মহাপরিচালক ড. জেরম কিমসহ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আইভিআই সদর দপ্তরে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

এছাড়া ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির এবং আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ অনলাইনে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

আইভিআইয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টি চেয়ারম্যান জর্জ বিকারস্টাফ আইভিআই প্রতিষ্ঠা-চুক্তির প্রথম পর্যায়ের স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক সদস্য প্রাপ্তিতে বাংলাদেশকে স্বাগত জানান।

তিনি নিরাপদ, কার্যকর ও সাশ্রয়ী মূল্যের ভ্যাকসিন আবিষ্কার, উন্নয়ন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে বিগত দুই দশক ধরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আইভিআইয়ের সহযোগিতামূলক সম্পর্কের নানা দিক তুলে ধরেন।

আইভিআইতে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভ জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে জরুরিচ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সহায়ক হবে এবং সহযোগিতার সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও আইভিআইয়ের মধ্যকার সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে কলেরা, শিগেলা ও অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল জাতীয় রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে ও বৈশ্বিক বাজারের জন্য স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হবে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আইভিআইয়ে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক সদস্যপদ প্রাপ্তিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সমর্থন দেয়ায় আইভিআইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

এছাড়া বাংলাদেশে ভ্যাকসিন গবেষণা ও উন্নয়ন, ভ্যাকসিন প্রযুক্তি হস্তান্তর, বাংলাদেশের গবেষক ও চিকিৎসকদের সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য আইভিআইকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, আইভিআইয়ের সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নতুন ভূমিকা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও আইভিআইয়ের মধ্যকার সহযোগিতার সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও সুদৃঢ় করবে।

রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বলেন, আইভিআইয়ে বাংলাদেশের সদস্যপ্রাপ্তি বাংলাদেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, আইভিআইয়ে বাংলাদেশের সদস্যপ্রাপ্তি জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সংক্রামক ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, আইভিআইয়ের সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশ রোগমুক্ত বিশ্ব নিশ্চিত করতে আইভিআইয়ের কর্মসূচীকে পূর্ণ সমর্থন দেবে।

আইভিআই প্রতিষ্ঠা চুক্তিটি অনুসমর্থনের মাধ্যমে আইভির সদস্য দেশ হিসাবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি লাভে বাংলাদেশকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানান আইভিআইয়ের মহাপরিচালক ড. জেরম কিম।

তিনি বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ, কার্যকর ও সাশ্রয়ী মূল্যের ভ্যাকসিন আবিষ্কার, বিকাশ ও বিতরণে আইভিআইয়ের কার্যক্রম এবং চলমান প্রকল্পগলো নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরেন।

১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ।

চলতি বছর ২১ মার্চ বাংলাদেশ চুক্তিটি অনুসমর্থন করে। জাতিসংঘ ৫ এপ্রিল চুক্তির অনুসমর্থন প্রাপ্তির প্রজ্ঞাপন জারি করে। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিটি ১ মে থেকে কার্যকর হয়।

Share.