কয়েক বছরে ডিসকাউন্ট দিয়ে ইভ্যালি নিজেদের বাজার সৃষ্টি করেছে। এতে যে লোকসান হয়েছে তা পুষিয়ে ওঠা কোনো বিষয় নয়। ছয় মাস সময় ও কিছু বাড়তি সুবিধা পেলে সব অভিযোগের নিরসন করা সম্ভব বলে মনে করেন ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল।
বিনিয়োগ ও পর্যাপ্ত সময় পেলে পরবর্তী একশ বছরের জন্য ইভ্যালি এক নম্বর কোম্পানি হবে বলেও মন্তব্য করেন মোহাম্মদ রাসেল।
শনিবার মাঝরাতে ফেসবুক লাইভে তিনি এসব কথা বলেন।
রাসেল বলেন, ‘আমরা যে নেচারে (ধরনের) ব্যবসা করি তা নতুন না। প্রি পেমেন্ট নিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা আমরাই কিন্তু নতুন করছি না। পৃথিবীর অনেক কোম্পানিই এভাবে বড় হয়েছে। কয়েক বছরে ডিসকাউন্ট দিয়ে ইভ্যালি নিজেদের বাজার সৃষ্টি করেছে। তবে ডিসকাউন্ট হয়তো একটু বেশি দেয়া হয়েছে। এতে যে লোকসান হয়েছে তা পুষিয়ে ওঠা কোনো ব্যাপার না। ছয় মাসের মধ্যেই সব ধরনের ব্যাকলগ ক্লিয়ার করা সম্ভব।’
আরও বলেন, ‘এখন যে অবস্থা, আমাদের মার্জিন লেভেল অনেক হাই। তা দিয়ে আমরা নতুন পণ্য সরবরাহের সঙ্গে ব্যাকলগও ক্লিয়ার করতে পারব। আমরা বিনিয়োগ পাওয়ার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন উঠে আমরা কেন বেশি ডিসকাউন্ট দিয়ে শুরু করেছিলাম? কিন্তু দারাজের মতো কোম্পানি প্রথমে ডাবল ভাউচার ডিসকাউন্ট দেয় নি? কোনো কোম্পানিই শুরুতে ডিসকাউন্টের মতো সুবিধা না দিয়ে বাজার ধরতে পারে না।’
রাসেল বলেন, ‘ইভ্যালি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অডিট করেছিল, খবর প্রকাশ পায় গত মাসে। তবে অডিট হয় চার মাস আগে। আমাদের কোনো ইলিগ্যাল একটিভিটি ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই পলিসি লেভেল থেকে আমাকে ডাকা হোক। কিভাবে ব্যবসা করি তা তারা দেখুক। আমার দ্বারা কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না তাও দেখুক। আমার কোনো ভুল থাকতে পারে। কিন্তু কোনো ক্রাইম ছিল না।’
রাসেল বলেন, ‘যারা মনে করেন তাদের বেশি বিনিয়োগ হয়ে গেছে, আমাদের ইমেইল করুন। যদি মনে করেন এ পর্যন্ত ইভ্যালি থেকে কিছু পাইনি, শুধু দিয়ে গেছি তাও আমাদের জানান। যারা গত বছরগুলোতে বিজনেস করে গেছেন, তারা আমাদের কিছুটা সময় দেন। শুধু ফ্লো একটু ঠিক মতো রাখতে দেন।’
তার মতে, ‘আপনারা সবাই নীতিমালা দেখলে বুঝবেন আপনাদের এখন চেক বা এমআরপি রিফান্ড দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আপনাদের প্রোডাক্টই দেব। প্রোডাক্ট দিতে হয়তো আগের মতো তত দ্রুত দিতে পারব না। যদি কিনা কোনো ধরনের বিনিয়োগ না পাই। আর আমরাও ফান্ড রেইজের চেষ্টা করছি, বিনিয়োগ যদি পেয়ে যাই তাহলে আপনাদের সব অর্ডার ক্লিয়ার করে ইভ্যালি নেক্সট হান্ড্রেড ইয়ারের জন্য এক নম্বর কোম্পানির জায়গা কনফার্ম করে ফেলবে। এই মুহূর্তে আপনাদের কাছে রিকোয়েস্ট করা ছাড়া হাতে কোন বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘যাদের রিফান্ডের চেক দেয়া ছিল, আমাদের এডিশনাল একটা সপ্তাহ সময় দিন। যে দুইটা ব্যাংকের চেক দেয়া ছিল, সেখানে আমাদের এক ধরনের ব্লকেজ করা আছে। আমরা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলছি। সাডেনলি অলটারনেটিভ কোনো ব্যাংকও আমাদের নাই, যেখান থেকে ইমারজেন্সিতে দিতে পারি। আমরা পুরো বিষয়গুলোর জন্য আপনাদের কাছে সময় চেয়ে নিচ্ছি।’
রাসেল আরও বলেন, ‘এর মধ্যেই আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রেগুলেটরি সব বডির সঙ্গে কথা বলব, আমাদের যে চাওয়া পাওয়াগুলো আছে, আপনাদের স্বার্থে (গ্রাহক) হয়তো উনাদের সাপোর্ট লাগবে, সেসব বিষয় নিয়ে আমরা পরিষ্কার আলাপ করব।
সময় চেয়ে তিনি বলেন, ‘উনাদের কাছে যেটা চাইব, আমরা জাস্ট সিক্স মান্থ, আমাদের একটা সিঙ্গেল অর্ডারও থাকবে না। আমরা প্রতি দুই সপ্তাহ পর পর কতগুলো ডেলিভারি করছি, উনাদের কাছে রিপোর্ট সাবমিট করব। ছয় মাসের মধ্যে নতুন পুরাতন যত অর্ডার আছে সব ডেলিভারি করব। আমাদের শুধু চাওয়া থাকবে বিজনেস করার জন্য কিছু এডিশনাল ফ্যাসিলিটি। উনাদের সহযোগিতা লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলছে ইভ্যালি বন্ধ করে দেয়া উচিত। তারা হয়তো কাস্টমারদের ভালোর জন্যই বলছে। কিন্তু ডেভেলপমেন্ট ফেজে কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ইনভেস্টমেন্ট ফেরত আনা যায় না।’ ♦