ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসছে তালেবান

0

গত তিন মাসে সহিংসতার মধ্য দিয়ে একের পর এক আফগানিস্তানের শহর দখলে নেয় তালেবান যোদ্ধারা। তবে গতকাল বিনা বাধায় রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।

দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা বিমানযোগে কাবুল ত্যাগ করার পরপরই কাবুলে প্রবেশ করতে শুরু করে তালেবান সদস্যরা। এদিন আফগান বাহিনী কোনো প্রতিরোধের চেষ্টাই করেনি।

এদিকে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছে তালেবান। এজন্য প্রায় সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে পদত্যাগ করছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। তিনি তাজিকিস্তানের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেছেন।

নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হচ্ছেন দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কূটনীতিক আলী আহমাদ জালালি।

আফগান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘রক্তপাত’ এড়াতে তালেবানের কাছে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে’ রাজি আফগান সরকার। এজন্য কাবুল দখলের পরপর তালেবানের শীর্ষ নেতারা প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। বিকালে ‘ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা শুরু হয়।

তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জোর করে কাবুল দখলের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। বিদ্রোহীদের এক নেতা জানিয়েছে, যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চান, তাদের নিরাপদে যেতে দিতে যোদ্ধাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তালেবানের মুখপাত্র এক টুইটে বলেছেন, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কাবুলের নিরাপত্তার দায়দায়িত্ব অন্য পক্ষের (আফগান সরকার)।

এর কিছুক্ষণের মধ্যে আফগান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রক্তপাত এড়াতে তারা আলোচনার মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি।

এদিকে রেকর্ড করা এক বার্তায় আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আফগান জনগণের চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, শহরে কোনো হামলা হবে না। অস্থায়ী সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।

‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা তালেবানের
বর্তমান আফগান প্রশাসনের নানা পদে কর্মরত অথবা অতীতে পশ্চিমাদের পক্ষে কাজ করা সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের দ্বারপ্রান্তে থাকা তালেবান।

সন্ধ্যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্র সুহেইল শাহীন এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, যারা এর আগে ‘আগ্রাসনবাদীদের’ জন্য কাজ করেছেন বা তাদের সাহায্য করেছেন অথবা এখন যারা ‘দুর্নীতিবাজ’ কাবুল প্রশাসনের নানা পদে কর্মরত আইইএ (ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান), তাদের সবার জন্য দরজা খোলা রাখা হয়েছে ও এরই মধ্যে ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা তাদের আরেকবার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, যেন তারা দেশ ও জাতির সেবায় কাজ করতে এগিয়ে আসেন।

এর আগে সকালে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর জালালাবাদের দখল নেয় তালেবান। কোনো যুদ্ধ ছাড়াই তালেবান শহরটির দখল নিতে সক্ষম হয়। জালালাবাদ দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ২৮টির রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানের হাতে।

আফগানিস্তানের ক্ষমতা আবার তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর রাজধানী কাবুল থেকে সরে যেতে শুরু করেছেন অধিবাসীরা।

Share.