খেলা ডেস্ক: করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড (ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া), যা সামলানোর জন্য নতুন রাস্তায় হাঁটতে চাইছে তারা। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া চায়, এই বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এসে ভারত চারটি নয়, পাঁচটি টেস্ট খেলুক।
যদিও তাতে ভারতীয় বোর্ডের কী লাভ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। টেস্ট ক্রিকেট এখন লাভের রাস্তা দেখায় একমাত্র অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডে। তা-ও শুধুমাত্র অ্যাশেজ সিরিজে আর বিরাট কোহালিরা খেলতে গেলে। উপমহাদেশে টেস্টের বাজার ভীষণ ভাবেই পড়তির দিকে। তাই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়রা বেশি করে চাইবেন, আইপিএল আয়োজন করার উপর জোর দিতে। আর করোনার জেরে দীর্ঘ লকডাউনের পরে আইপিএল করতে হলে অন্যান্য টেস্ট সিরিজ কাটছাঁট হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। স্টিভ স্মিথদের বোর্ডের আরও দীর্ঘ টেস্ট সিরিজের প্রস্তাব তাই কতটা গৃহীত হবে, ঘোর সংশয় থাকছে।
সূচি অনুযায়ী, কোহালিদের অস্ট্রেলিয়া সফর শুরু হওয়ার কথা অক্টোবরের শুরুতে। প্রথমে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তার পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বছরের শেষ থেকে স্মিথদের বিরুদ্ধে চারটি টেস্ট ম্যাচ। কিন্তু করোনা মহামারির জেরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনিশ্চিত। শেষ পর্যন্ত যদি বিশ্বকাপ না হয় বা অন্য কোনও দেশে সরে যায়, তা হলে কোটি, কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়বে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। ইতিমধ্যেই বিশাল আর্থিক ক্ষতির আতঙ্ক তাড়া করছে তাদের। যে কারণে ভারতের বিরুদ্ধে চারের বদলে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলে কিছুটা ক্ষতি সামলাতে চাইছে অস্ট্রেলীয় বোর্ড।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার কেভিন রবার্টস মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘আসন্ন ক্রিকেট মরসুমের উপরে যদি অতিমারির প্রভাব পড়ে, তা হলে বুঝবেন আমরা লক্ষ, লক্ষ ডলার হারানোর মুখে দাঁড়িয়ে। তাই ক্রিকেট মরসুম বাতিল হওয়া আটকাতে হবে আমাদের। প্রয়োজনে ফাঁকা স্টেডিয়ামেও খেলা হতে পারে। আমরা সব রাস্তাই খতিয়ে দেখব।’’ ফাঁকা স্টেডিয়ামে ম্যাচ হলে টিভি সম্প্রচারের আগ্রহ বাড়বে কি কমবে, সেই প্রশ্নও থাকছে। এক পক্ষের ধারণা, আগ্রহ কমবে কারণ ফাঁকা মাঠের সম্প্রচারে বিজ্ঞাপনদাতাদের কী আর আগ্রহ থাকবে? আর এক পক্ষের সওয়াল, সম্প্রচারকারী সংস্থারা একচেটিয়া খেলা দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। মাঠে কেউ খেলা দেখতে যাচ্ছেন না। সবাই টিভি-তে দেখবেন। তাই টিভিই খেলা দেখার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে।
যদিও করোনা নিয়ে যা পরিস্থিতি, কোনও দেশ বা আইসিসি-র পক্ষেই আন্দাজ করা সম্ভব নয়, কবে আবার খেলা চালু করা যেতে পারে। প্রবল ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড এমনও প্রস্তাব দিচ্ছে যে, একটি কেন্দ্রেই খেলা করবে। ভারতীয় দলকে রাখা হবে মাঠের মধ্যে হোটেলে। ফাঁকা মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ করার কথাও ভাবছে তারা। রবার্টস বলেছেন, ‘‘আমরা জানি, এই প্রতিযোগিতার সম্প্রচার থেকে আইসিসি যে অর্থটা পাবে, তা ক্রিকেট বিশ্বের সকলের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা চাইছি, যে কোনও উপায় হোক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন করতে।’’