২০২২ সালে পর্যটকরা স্বাধীনভাবে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। চলতি বছর তারা নিশ্চিন্তে দেশের বাইরে ছুটি কাটাতে পারবেন। অর্থাৎ কভিড-১৯ মহামারীর আগের সময়ের মতো ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করতে পারবেন তারা।
কেননা বিশ্বের অনেক জনপ্রিয় গন্তব্য তাদের সীমান্ত খুলে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে তারা টিকা কর্মসূচি চালু রাখার পাশাপাশি বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে, পরিহার করছে দীর্ঘমেয়াদি কোয়ারেন্টাইন।
বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ও শ্রমঘন একটি শিল্প এটি। পর্যটন শিল্পের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার বছর হবে ২০২২ সাল। চলতি বছর হবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বছর।
ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বৈশ্বিক পর্যটনখাতের অবদান বেড়ে দাঁড়াতে পারে আট লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলারে। এর আগে ২০১৯ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ খাত প্রায় নয় লাখ ২০ হাজার ডলার অবদান রাখে।
পরের বছর ২০২০ সালে সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়ে খাতটি। তখন ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ ধস নামে এ খাতে। ক্ষতি হয় প্রায় চার লাখ ৫০ হাজার ডলারের। ডব্লিউটিটিসি জানায়, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু হলে ও ইতিবাচক ধারায় ফিরলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন খাত ছয় দশমিক চার শতাংশ অবদান রাখবে। অর্থাৎ মহামারীপূর্ব রমরমা অবস্থায় ফিরে আসবে পর্যটন খাত।
মহামারীতে বিপর্যস্ত হয়ে বিশ্বের পর্যটন শিল্প। সুখবর হচ্ছে, ২০২২ সালটি সেই সব সমস্যা কাটিয়ে উঠবে। কেননা অনেক দেশের সীমান্ত খুলে দেয়া হচ্ছে। দেশের ভেতরে ও বাইরে অনেকে বেড়াতে যাচ্ছেন। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোর নাগরিকদের পাশাপাশি এশিয়ায়ও পর্যটকদের ঘোরাফেরা বেড়েছে। এভাবে ক্রমান্বয়ে আরও অনেক দেশ সচেতন হচ্ছে।
শিগগির অগ্রগতি দেখা যাবে এ খাতে। তবে লক্ষ্য অর্জনে সব সরকারকে কোভিড-১৯ টিকাদানে গুরুত্ব দিতে হবে। বুস্টার ডোজ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর অনুমতি দিতে হবে।
পর্যটকদের মধ্যেো আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। তারাও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। তাই দীর্ঘ ঘরবন্দি দশা কাটিয়ে তারা পছন্দের গন্তব্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
ডব্লিউটিটিসির গবেষণা থেকে জানা গেছে, চলতি বছর পর্যটন শিল্পে তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বৈশ্বিক ট্যুরিজম সংস্থাগুলো বিশ্বের সব সরকারের প্রতি আহবান জানায়, পর্যটকদের জন্য সহজ ও সুবিধাজনক ভ্রমন নিশ্চিতে ডিজিটাল সমাধান খুঁজে বের করা উচিত। তারা যেন কোনো ধরণের সমস্যায় না পড়েন সেদিকে নজর দিতে বলেন তারা।
ডব্লিউটিটিসির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুলিয়া সিম্পসন বলেন, গত দুই বছরে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন খাত। এ খাতের সঙ্গে যুক্ত লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান, উদ্যোগ ও ব্যক্তি রীতিমতো পথে বসেছে।
তিনি বলেন এ বছর আর কোনো ক্ষতি দেখতে চাই না। কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির উন্নতি দেখতে চাই। ইতোমধ্যে যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের পুনরায় কর্মসংস্থান করতে চাই যেন সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হয়। ♦