মাস্টার রনি হিজড়া। লৈঙ্গিক পরিচয়ে তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন গেরিলা যোদ্ধা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু লৈঙ্গিক পরিচয় ও মুক্তিযুদ্ধের সনদ হারিয়ে প্রায় ৫০ বছর লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। স্বজন ও সহযোদ্ধাদের কাছে তিনি ছিলেন ‘নিখোঁজ’ কিংবা ‘মৃত’।
এমন বাস্তব ও দুঃসহ জীবনের গল্প-ই উঠে এসেছে ‘অগ্নিঝরা দিনের না বলা কথা’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রে। মুক্তিযুদ্ধে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের অবদান ও বীরত্ব নিয়ে প্রথমবারের মতো জীবনমুখী প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন শরিফুল ইসলাম পলাশ।
ভিন্নধর্মী প্রামাণ্যচিত্রর প্রথম পর্ব এরইমধ্যে “দ্য পাথ ক্রিয়েটর” নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে।
আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে থাকা তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর যারা সরাসরি যুদ্ধ করেছেন, স্বজন হারিয়েছেন, পাকিস্তানিদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন তেমন মানুষের গল্প তুলে ধরা হবে- বলে জানিয়েছেন নির্মাতা।
শরিফুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘প্রথমবারের মতো হিজড়া জনগোষ্ঠীর বীরত্বের গল্প সামনে আসছে। রনি মাস্টারের মতো যারা অন্ধকারে আছেন, তাদের পাদপ্রদীপের আলোয় আনাই মূল লক্ষ্য। যাতে তারাও আর দশজন সহযোদ্ধার মতো প্রাপ্য সম্মান পান। এই জনগোষ্ঠীর পরবর্তী প্রজন্মও যেন বিস্মৃত না হন।’
গবেষণা ও তথ্যানুসন্ধানমূলক প্রামাণ্যচিত্রের তিন পর্বের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করছে বেসরকারি সংস্থা বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (বিএসডব্লিউএস)।
উল্লেখ্য, ‘অগ্নিঝরা দিনের না বলা কথা’ ডকুফিল্মটির ‘ট্রেইলার’ মার্চের শেষ সপ্তাহে ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর অন্ধকারে থাকা গেরিলার গল্প নিয়ে পর্ব এলো।
সিনেম্যাটোগ্রাফিসহ ডকুফিল্মটি নির্মাণে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন আরেক তরুণ নির্মাতা ওয়াসিম সিতার। ♦