চলতি বছর ২৮ মার্চ থেকে আগস্টের দূরত্ব বেশি না। মহামারীর পৃথিবীতে সময়ও যেন চলে যায় দ্রুত। তবে এ সময় দেশ পেয়ে গেছে তার এক মাঠ মাতানো হবু ক্রিকেট নক্ষত্রকে।
শুধু রাজধানী নয়, প্রতিভা আছে ছায়া ঢাকা মফস্বলেও। প্রান্তে, উপকূলে আরও বহু দিকে। শুধু চাই একটু সঠিক পরিচর্যা। উপযুক্ত ক্রিকেট অবকাঠামো গড়ে দেয়ার এ গুরু দায়িত্ব ক্রিকেট কর্তাদের ওপরই বর্তায়।
নাসুম আহমেদের আবির্ভাব সে সত্যকে যেন সুস্পষ্ট করলো। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মধুরাপুর গ্রামের আক্কাছ আলীর ছেলে নাসুম।
গত ২৮ মার্চ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিলন্টনে ডেব্যু হয় এ প্রতিভাবানের। অস্ট্রেলিয়ার দম্ভ চূর্ণের ঐতিহাসিক টি টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে এ বাহাতি অর্থডক্স স্পিনার চার ওভার বোলিং করে ১৯ রান খরচ করে চার উইকেট তুলে নেন।
এ পর্যন্ত ৮টি আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে নাসুমের উইকেট ৮টি।
নাসুমের বয়স এখন ২৬। আরও দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট তার সার্ভিস পাবে। বিরাজমান তারকাদের অবসর শেষে কে ধরবেন দেশের ক্রিকেটের হাল? এর জবাব যেন এক নাসুম আহমেদই। পাইপ লাইনে আছেন আরও অনেকে।
শুধু বোলার হয়ে নয়, লোয়ার অর্ডারেও দারুণ কার্যকর ব্যাটার হয়ে উঠতে পারেন নাসুম। আন্দাজে এ কথা বলা নয়। দেশের অভ্যন্তরের ক্রিকেট লিগে নাসুম আহমেদের ব্যাটিংয়ের স্ট্রাইকিং রেট ৭৩.৪০। ক্লাব পর্যায়ে আছে দুটি ফিফটি। ম্যাচের অন্তিম স্লগকালেও তিনি হয়ে উঠতে পারেন দেশের ত্রাণকর্তা।
নাসুম বিদ্যুৎ গতির ফিল্ডার হিসেবেও মাঠে নজর কেড়েছেন। লিস্ট এ’ ক্যাটাগরির ক্রিকেটে তার ক্যাচের সংখ্যা ৯টি। আর সীমানা ঘেঁষা বাউন্ডারি ঠেকাতে তার স্লাইডিং ডাইভও সবার নজর কেড়েছে।
এবার নাসুম আহমেদের সঙ্গে চলা কিছু বৈষম্যমূলক আচরণের দিকে চোখ দেয়া যাক। এ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ জেলা ক্রিকেট থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞার খড়গ রয়েছে।
সংবাদসূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ক্রিকেট লিগে জেলার পক্ষে না খেলে বিভাগীয় সিলেট দলে খেলায় নাসুম আহমেদকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
এক সময় সুনামগঞ্জের প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবে খেলতেন নাসুম আহমেদ। কিন্তু তার পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা সিলেট শহরে। আর কোন খেলোয়াড় চাইবেন না আরও উচ্চতর লেভেলে খেলার সুযোগ হারাতে? নাসুমের অন্যায় তবে কী? এই কি দেশে গুণীর কদর?
-হাসান শাওন