টিকা সরবরাহের বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের আওতায় জাপানের কাছ থেকে ২৫ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ।
আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন দেশে জাপানের টিকা দেয়ার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে আমাদের টিকা দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে তারা কোভ্যাক্সের আওতায় একটা বড় অঙ্কের টিকা পাঠাবেন। কোভ্যাক্সের আওতায় বলে এটা বিনা মূল্যে পাবো। জাপান থেকে আড়াই মিলিয়ন (২৫ লাখ) টিকা পাবে বাংলাদেশ।’
জাপান কোন টিকা পাঠাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জাপানের কাছ থেকে আমরা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাবো। তাদের কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আছে।’
এছাড়া কোভ্যাক্সের আওতায় ইউরোপ থেকে বাংলাদেশ ১০ লাখ টিকা পাবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত এ টিকা দেশে আনার বিষয়ে গত নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়।
অগ্রিম টাকাও পরিশোধ করে বাংলাদেশ।
চুক্তি অনুযায়ী, তিন কোটি ডোজের প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ করে বাংলাদেশের পাওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ৭০ লাখ টিকা এসেছে।
নরেন্দ্র মোদি সরকার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সেরাম। শেষ পর্যন্ত টিকা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় দেশের টিকাদান কর্মসূচি।
কেনা টিকার বাইরে বাংলাদেশকে ৩৩ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে ভারত সরকার।
এদিকে টিকা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেয়া প্রায় ১৫ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। এ টিকার সংকট ঘোচাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে সরকার।
ভারত থেকে টিকা আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরই টিকার বিকল্প উৎসের সন্ধানে নামে বাংলাদেশ। চীন ও রাশিয়ার টিকা পেতে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। চীন থেকে এরই মধ্যে টিকা আসা শুরু হয়েছে। টিকা আসছে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা বণ্টনের জোট কোভ্যাক্স থেকেও।
গত শুক্রবার ও শনিবারই সরকার হাতে পেয়েছে ৪৫ লাখ ডোজ টিকা। এগুলো চীনের সিনোফার্মের বিবিআইবিপি-করভি ও যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার টিকা।
এর বাইরেও উপহার হিসেবে দুই দফায় বাংলাদেশকে ১১ লাখ টিকা দিয়েছে চীন। ফাইজারের টিকাও এসেছে লক্ষাধিক ডোজ।
বিভিন্ন উৎস থেকে আরও টিকা পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আবার গণটিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
এবার টিকাদানের পরিসরও বাড়াচ্ছে সরকার। বয়সের সীমা কমিয়ে করা হয়েছে ৩৫ বছর। ♦