পুঁজিবাজার ডেস্ক: করোনাভাইরাসের কারণে সরকার যতদিন সাধারণ ছুটি দেবে, ততোদিন শেয়ারবাজারেও লেনদেন হবে না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পরিচালনা পর্ষদের একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, করোনা সংক্রমণরোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার আগে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস দেখা দেয়। ধস ঠেকাতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম চালু করে। এতে শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ আশঙ্কজনক হারে কমে গেছে। ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলো লোকসানের মুখে পড়েছে।
তারা বলছেন, প্রতিদিন গড়ে যে লেনদেন হচ্ছে তা দিয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিবিধ খরচই উঠবে না। তাই এ পরিস্থিতিতে লেনদেন বন্ধ থাকলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর লোকসানের পরিমাণ কম হবে। এ কারণে সরকার যতদিন সাধারণ ছুটি দেবে ততোদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে না।
করোনার সংক্রমণ যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সরকার প্রথমে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ারবাজারে প্রথম দফায় লেনদেন বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এরপর সরকার দ্বিতীয় দফায় সাধারণ ছুটি বাড়ালে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে তৃতীয় দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ায় সরকার। সেই সঙ্গে শেয়ারবাজারের লেনদেনও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শুক্রবার চতুর্থ দফায় আবারও সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে।
এ বিষয়ে ডিএসই’র এক পরিচালক বলেন, আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতদিন সরকারের সাধারণ ছুটি থাকবে ততোদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে না। ২৫ এপ্রিলের পর সাধারণ ছুটি না বাড়লে ২৬ এপ্রিল থেকে আবার শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আতঙ্কে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস হয়েছে। নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করে পতনের লাগাম টানা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু লেনদেন খুব একটা হচ্ছে না। লেনদেন বন্ধ করার আগের কয়েক কার্যদিবসে যে লেনদেন হয়েছে, তাতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিদ্যুৎ বিলের খরচই উঠবে না। এ পরিস্থিতিতে বন্ধের মধ্যে লেনদেন চালালে সবারই লোকসানের পাল্লা ভারি হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার শেয়ারবাজার ভালো করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। কিন্তু করোনাভাইরাস শেয়ারবাজারের বড় ক্ষতি করে দিয়েছে। কতোদিন এই করোনার প্রকোপ চলবে তা কেউ বলতে পারে না। আবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও শেয়ারবজারের পরিস্থিতির উন্নতি হতে অনেক সময় লেগে যাবে বলে মনে হচ্ছে।