গ্রিন জোনে অনুমতি ছাড়া বিনোদনের জন্য ছোট আকারের ড্রোন এখন থেকে আকাশে উড্ডয়ন করানো যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ ড্রোনের ওজন হবে পাঁচ কেজির নিচে। তার উড্ডয়ন অবশ্যই সমতল ভূমি থেকে ১০০ ফুটের মধ্যে হতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বেবিচক এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল ড্রোন ওড়ানোর বিষয়ে বেবিচকের ভার্চুয়াল ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ড্রোনের বিষয়ে নির্দেশনা দেন বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন ইমরানুর রহমান।
জানা গেছে, ড্রোন উড্ডয়নের এলাকা বা জোনকে গ্রিন, ইয়েলো ও রেড- এ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সংরক্ষিত এলাকা, সামরিক এলাকা, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, জনসমাগমপূর্ণ এলাকাকে ইয়েলো জোন ধরা হয়েছে।
নিষিদ্ধ এলাকা, বিপজ্জনক এলাকা, বিমানবন্দর এলাকা, কেপিআই ইত্যাদিকে রেড জোন হিসেবে ধরা হয়েছে।
বাকী সব গ্রিন জোন।
গ্রিন জোনে যে কেউ অনুমতি ছাড়া ১০০ ফুটের মধ্যে ড্রোন ওড়াতে পারবেন। এর বেশি হলে বেবিচক থেকে অনুমতি নিতে হবে। জানা গেছে, পাঁচ কেজির বেশি ওজন অথবা ১০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় উড্ডয়ন সক্ষম ড্রোন ওড়াতে হলে বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর ও শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে এসএসসি বা সমমানের হতে হবে।
তাছাড়া ড্রোন তৈরি এবং সংযোজন, নিবন্ধন ও চালকের প্রত্যয়নের বিষয়সহ অঅনুমোদিতভাবে ড্রোন পরিচালনা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বেবিচক জানিয়েছে, বর্তমানে যে সব প্রযুক্তি জনগণের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে তার মধ্যে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের পর আরেকটি প্রযুক্তি হলো ড্রোন। সাম্প্রতিক সময়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, ব্যবসা বাণিজ্য ও চিত্তবিনোদনসহ নানা ক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে বাংলাদেশেও ব্যক্তিগত, সরকারি, বেসরকারি, সামরিক ও বেসামরিক পর্যায়ে ড্রোনের ক্রমাগত ব্যবহার বাড়ছে।
সম্প্রতি ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা-২০২০ প্রণীত হয়েছে। সেই নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য ওয়ার্কশপটি অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, ড্রোন উড়ানোর উদ্দেশ্য বিবেচনায় একে চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।
এর ‘ক’ শ্রেণিতে রয়েছে বিনোদনের (খেলার) জন্য ব্যবহৃত ড্রোন। ‘খ’ শ্রেণিতে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বা কোনো ব্যক্তির শিক্ষা ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য ড্রোন। ‘গ’ শ্রেণিতে জরিপ, স্থিরচিত্র, চলচ্চিত্র, পণ্য পরিবহনের মতো বাণিজ্যিক ও পেশাদার কাজের জন্য ড্রোনগুলো থাকবে। সবশেষ ‘ঘ’ শ্রেণিতে থাকবে রাষ্ট্রীয় ও সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ড্রোন।
এই চার শ্রেণির ড্রোনের মধ্যে ‘ক’ ও ‘ঘ’ শ্রেণির ড্রোন উড্ডয়নের জন্য কারও অনুমতি নিতে হবে না। তবে ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির ড্রোন গ্রিন, ইয়েলো, রেড যেকোনো জোনে উড্ডয়নের জন্য বেবিচকের নিয়ম মেনে অনুমতি নিতে হবে। ‘গ’ শ্রেণির ড্রোনের জন্য ব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি যেন রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল, স্যাটেলাইট ও এভিয়েশনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করতে পারে, তাই বিটিআরসি থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। ♦