কোভিড-১৯ সংক্রমণ কমে আসার ধারার সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুও একশর নিচে নেমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা গত ৯ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এর আগে গত ২৬ জুন ৭৭ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল। এরপর মৃতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে আড়াইশ ছাড়িয়েছিল। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
আগস্টের মধ্য ভাগ থেকে কমতে শুরু করলেও দিনে মৃত্যু একশর নিচে নামল আজই প্রথম। নতুন ৮০ জনের মৃত্যুতে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৯২৬।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা গত দিনের চেয়ে কমেছে। এ সময় ৩ হাজার ৪৩৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ সংখ্যা ১০ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৯ জন। তবে গত দিনের তুলনায় শনাক্তের হার কিছুটা বেড়েছে।
গতকাল এ হার ১২-এর ঘরে থাকলেও আজ তা বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৬৭। গত এক দিনে ৪ হাজার ৮৬১ জন রোগীর সুস্থ হওয়ার খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সেরে উঠল ১৪ লাখ ৯ হাজার ২৩১ জন।
গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ এ ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২১ কোটি ৫৫ লাখের বেশি রোগী। বাংলাদেশে গত বছর শেষার্ধ্বে মহামারী কিছুটা নিয়ন্ত্রণে দেখা গেলেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে গত এপ্রিল থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু ঊর্ধ্বমুখী হয়।
জুন পেরিয়ে জুলাইয়ে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা পার করে বাংলাদেশ। আক্রান্তের সংখ্যা হুহু করে বাড়ার মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২৫ হাজার ১২৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৮ লাখ ৪১ হাজার ৪৭২টি নমুনা। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
শনাক্ত অনুযায়ী সুস্থতার হার ৯৪ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ঢাকা ৩৪ জন ঢাকা বিভাগের। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ২১, রাজশাহী বিভাগে এক, খুলনা বিভাগে নয়, বরিশাল বিভাগে চার, সিলেট বিভাগে ছয়, রংপুর বিভাগে তিন ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃত ৮০ জনের মধ্যে ২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ও ২ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৪১ জন ছিল পুরুষ, ৩৯ জন ছিল নারী। ৬৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ১২ জন বেসরকারি হাসপাতালে ও ২ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৩৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকা জেলায়। এদিন ঢাকার পরে একশ’র বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে শুধু চট্টগ্রামে ১৮৭ জন। ♦