কাজের কাজী ব্লুটুথ ডিভাইস যেভাবে কাজ করে

0

মরা দৈনন্দিন জীবনযাপনের নানা ক্ষেত্রে ব্লুটুথ ব্যবহার করি। বাড়ি, গাড়ি, ল্যাপটপ, সেলফোন ইত্যাদির পাশাপাশি অনেক ডিভাইস সহজে ব্যবহার করার জন্য এ প্রযুক্তি বেশ জনপ্রিয়। মূলত নানা সুবিধার কারণে ব্লুটুথ ও এ প্রযুক্তিতে তৈরি ডিভাইসের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

ব্লুটুথে কাছাকাছি থাকা একাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানের জন্য তার বা ক্যাবলের পরিবর্তে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়।

সেলফোন যেভাবে কাজ করে, ব্লুটুথ প্রযুক্তি অনেকটা সেভাবে কাজ করে। তবে সেলফোনের তুলনায় ব্লুটুথে ব্যবহৃত বেতার তরঙ্গ প্রায় ১০০০ গুণ দুর্বল। কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত মোবাইল টাওয়ারের সঙ্গে সেলফোন যোগাযোগ করতে পারে।

অন্যদিকে সাধারণত দুটি ব্লুটুথ ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ১০ ফুটের বেশি সেগুলি কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় না।

ধরা যাক, আপনার কম্পিউটারের সঙ্গে ওয়্যারলেস ব্লুটুথ কোনো কীবোর্ড সংযুক্ত রয়েছে। কম্পিউটারটি নিজের বাসায় রেখে যদি আপনি কীবোর্ড নিয়ে বন্ধুর বাসায় যান, তাহলে বেশি দূরত্বের কারণে ডিভাইসটি কম্পিউটারের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতে পারবে না। একইসঙ্গে বন্ধুর বাসায় বসে কীবোর্ডে কিছু টাইপ করলে আপনার বাসায় থাকা কম্পিউটারের স্ক্রিনে কিছু দেখা যাবে না।

যখন একাধিক ব্লুটুথ ডিভাইস কাছাকাছি থাকে, তখন সেগুলির মধ্যে থাকা ক্ষুদ্র কম্পিউটার চিপের মাধ্যমে একটির সঙ্গে অন্যটি সংযুক্ত থাকে। মূলত ক্ষুদ্র সেসব চিপের মধ্য থেকেই বিশেষায়িত ব্লুটুথ বেতার তরঙ্গ নির্গত হয়। কিন্তু ব্লুটুথ ডিভাইস ব্যবহারের জন্য প্রথমে চিপটি চালু করতে হয়। আর সেটি চালু করার জন্য ব্লুটুথ ডিভাইসে থাকা নির্দিষ্ট বোতাম বা সুইচে চাপ দিতে হয়।
একবার চালু হয়ে গেলে দুটি ব্লুটুথ ডিভাইসের মধ্যে কম রেঞ্জের একটা নেটওয়ার্ক তৈরি হয়, যার মধ্য দিয়ে সাধারণত তথ্যের আদান-প্রদান হয়। এ ধরনের নেটওয়ার্ককে বলা হয় পিকোনেট।

মেট্রিক পদ্ধতির পরিমাপ ব্যবস্থায় খুবই ক্ষুদ্র কোনো কিছুকে নির্দেশ করার জন্যে ‘পিকো’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

মূলত ব্লুটুথে সংযুক্ত একাধিক ডিভাইসের মধ্যে থাকা নেটওয়ার্ক হলো পিকোনেট। যদি আপনার কম্পিউটারের সঙ্গে একাধারে ব্লুটুথ কীবোর্ড, মনিটর, মাউস ও স্পিকার সংযুক্ত থাকে, তাহলে সবগুলি ডিভাইস তাদের নিজস্ব ব্লুটুথ পিকোনেট গঠন করবে। তবে পিকোনেটের মাধ্যমে একটির সঙ্গে আরেকটি ডিভাইস আলাদা তথ্য বিনিময় করতে পারে না। বরং কেন্দ্রীয়ভাবে প্রধান একটি ডিভাইসের সঙ্গেই বাকি সব ডিভাইস সংযুক্ত থাকবে। যেমন প্রধান ডিভাইস হিসেবে কাজ করবে আপনার কম্পিউটার।

সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে পিকোনেট তৈরি হয়। কীবোর্ডের মতো আপনার যেকোনো ডিভাইস যদি পিকোনেটের রেঞ্জের মধ্যে ইন্সটল করা থাকে, তাহলে প্রধান ডিভাইসের সঙ্গে সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হবে। রেঞ্জের বাইরে নিয়ে গেলে কীবোর্ড বা এমন যেকোনো ব্লুটুথ ডিভাইস স্বয়ংক্রিয়ভাবে পিকোনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। একইভাবে কীবোর্ডটি আবারো রেঞ্জের মধ্যে নিয়ে আসলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হয়ে যাবে।

Share.