করোনাভাইরাসজনিত মহামারিতে থমকে গেছে দেশ। একদিকে হাজারো মানুষের সংক্রমণ ও মৃত্যু, অন্যদিকে মহামারি এড়াতে লকডাউনের মাধ্যমে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া। এমন সঙ্কট শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের আর কোনো দেশেও আসেনি। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে একেকটি দেশ। আমদানি-রপ্তানি, পণ্য ও সেবা উৎপাদনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ।
বাংলাদেশেও দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বড় বিপর্যয় এড়াতে ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। আর এতে বিপুল ক্ষতির মুখে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো। বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের কথা ভেবে সবাই উদ্বিগ্ন। বেসরকারি খাতে চাকরি হারানোর আতঙ্ক প্রবল হয়ে উঠেছে। এ সঙ্কটে দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প গোষ্ঠি ইফাদ গ্রুপ তার কর্মীদের আশ্বস্ত করেছে কর্মীদের পাশে থাকার। আশা প্রকাশ করেছে, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় অল্প সময়ের মধ্যে সংকট কাটিয়ে উঠার।
সম্প্রতি ইফাদ গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইফাদ অটোস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ এক ভিডিও বার্তায় কর্মীদের পাশে থেকে সবার চেষ্টায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তাসকিন আহমেদ জানিয়েছেন, ইফাদে আমরা সবাই পরিবারের মতো থাকি। সবার শ্রম-ঘামেই আজ এ গ্রুপ এতদূর এসেছে। তাই আমরা সুখে-দুঃখে একসাথেই থাকতে চাই, কষ্ট ভাগাভাগি করতে চাই; আবার সবাই মিলে এ অবস্থার উত্তরণও ঘটাতে চাই।
তিনি বলেন, করোনার প্রকোপে দেশের প্রতিটি শিল্পই প্রচণ্ড ক্ষতির শিকার। এ নিয়ে সন্দেহের কিছু নেই। কিন্তু এ ক্ষতিকে মেনেই সবাই যদি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পাশে নিয়ে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করে তাহলে সহজে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। আর সব প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়ালে আপন শক্তিতে ফিরবে দেশের অর্থনীতিও।
তিনি গ্রুপের কর্মীদের আশ্বাস্ত করে বলেন, এ দুঃসময়ে আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আপনারা কেউ একা নন। আমরা আপনার ও আপনার পরিবারের সদস্যদের পাশে আছি। কারণ নিজ ঘরের বাইরে আমাদের এক বিশাল ইফাদ পরিবার রয়েছে। আর আপনারা প্রত্যেক এ পরিবারের সদস্য। শ্রদ্ধেয় চেয়ারম্যান সাহেব আপনাদেরকে দুঃশ্চিন্তা করতে বারণ করেছেন। ইনশাল্লাহ,আমরা সকলে মিলে এই সঙ্কটময় মুহূর্ত কাটিয়ে উঠবোই।
তাসকিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর আগে আমাদের শ্রদ্ধেয় চেয়ারম্যান সাহেব মুষ্টিমেয় কয়েক সহযোগী নিয়ে ইফাদের যাত্রা শুরু করেন। এই এতগুলো বছরের পথচলা মোটেও মসৃণ ছিল না। জীবনের শত প্রতিকূলতার মধ্যে সেই কিছু সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় আজ ইফাদ পরিবার ৩৫ গুণেরও বেশি উচ্চতায় পৌঁছেছে। তাদেরই হাত ধরে জেনেছি, পরিবার কি জিনিস। আজকের এ ইফাদ পরিবার আমাদের সবার আন্তরিক চেষ্টা, রক্ত, ঘাম ঝরানো কষ্টের ফল। এ পরিবার তো এত সহজে মচকে যাওয়ার বা ভেঙ্গে পড়ার নয়।
তিনি আরো বলেন, আপনারা সবাই জানেন, আমাদের কোম্পানি একটা অস্বাভাবিক ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেছে। সামনের দিনগুলোর কথা ভেবে আমার মতো আপনারাও চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ এক অস্বাভাবিক ক্রান্তিলগ্নে আমি আপনাদের আশ্বাস্ত করতে চাই, ভয় পাবেন না। আমরা সবাই আপনাদের সাথে আছি।
আমার বিশ্বাস আমরা সবাই মিলে আগামী ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো ইনশাল্লাহ। আমরা বাঙালি, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। মনোবল হারালে চলবে না।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমরা সকলে একসাথে হয়ে নিষ্ঠার সাথে যদি কাজ করতে পারি,তাহলে অল্প দিনের মধ্যেই আমরা এ ক্ষতি পুষিয়ে আবার শক্তিশালী ও লাভজনক অবস্থানে পৌঁছাতে পারবো। ♦