যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান গবেষণা প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাস টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে টিকার ডোজ পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এক কোটি ৬৫ লাখ ছাড়িয়েছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। মৃত তিন লাখের বেশি। এমন পরিস্থিতিতে আজ-কালের মধ্যে টিকাকরণ শুরু হতে পারে দেশটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজারের তৈরি টিকা অনুমোদন দেয়া হয় ১১ ডিসেম্বর। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) পর (সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) সিডিসিও টিকাটি সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে। এ সম্পর্কিত নির্দেশ আগেই দিয়েছিল সিডিসি। ফলে এখন শুধু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর পরিবহন ও সেখানে অভিজ্ঞ লোকেদের দ্বারা বিতরণ ও প্রয়োগের পর্যায়টি বাকি আছে।
তবে দুশ্চিন্তা কাটছে না প্রশাসনের। এ বিশাল সংক্রমণ কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব, সে নিয়ে পথ খুঁজে পাচ্ছে না প্রশাসন। নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ জন্য বারবার বলে চলেছেন, টিকা দেওয়া শুরু হলেও মাস্ক পরা বন্ধ করা যাবে না।
গত শুক্রবার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেছেন, জরুরি ভিত্তিতে ফাইজারকে ছাড়পত্র দিয়েছে এফডিএ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিকাকরণ শুরু হবে।
শনিবার আর্মি জেনারেল গুস্তাভ পার্না বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা পাঠানোর কাজ শুরু হবে। রবিবার প্রথম শিপমেন্ট হবে। সোমবারের মধ্যে দেশের ১৪৫ অঞ্চলে পৌঁছে যাবে টিকা। বাকি ৬৩৬ অঞ্চলে টিকা পৌঁছাবে মঙ্গলবার, নয়তো বুধবারে। এ ভাবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ৩০ লাখ ডোজ টিকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
তবে আজ সোমবারের মধ্যে টিকা দেয়া শুরু হয়ে যাবে বলে শোনা যাচ্ছে। পার্না জানিয়েছেন, এক দিকে যেমন শিপমেন্টের কাজ চলবে, অন্য দিকে ফাইজার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আরও বেশি পরিমাণ টিকা পাঠাতে থাকবে তারা।
গুস্তাভ বলেন, ‘কয়েক মাসের প্রস্তুতি সত্ত্বেও ৩৩ কোটি মানুষের কাছে এ টিকা পৌঁছানো বেশ জটিল বলে মনে হচ্ছে। এ টিকা পরিবহনে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এর মধ্যে সেলসিয়াস স্কেলে শূন্যের ৭০ ডিগ্রি নিচে সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। সামনে যে পথ পড়ে আছে, তা বেশ কঠিন।’
টিকাকরণ শুরু হলে, প্রথম দফায় প্রবীণ নাগরিক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দেয়া হবে। বাইডেনের মতো পার্নাও সতর্ক করেছেন, ‘এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সব নাগরিক টিকা না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হওয়ার নয়।’
তবে একটা বিষয়ে তিনি নিশ্চিত, ‘টিকাতেই এ যুদ্ধ থামবে।’ ♦