করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ

0

করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছেন এভার কেয়ার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ডিপার্টমেন্টের রেজিস্ট্রার ডা. আসিফ সৈকত। লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট মেডিভয়েসে।

প্রথম উপদেশ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা পেটের উপর ভর করে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন বা সামান্য কাত হয়ে বাহু বা হাতের উপর ভর করে। আমরা সচরাচর যেভাবে ঘুমাই অর্থাৎ পিঠের উপর ভর করে না ঘুমানো শ্রেয়।

ভেন্টিলেশন ইন প্রোন বা উপুর হয়ে শোয়া অবস্থায় ফুসফুসের অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে৷ এতে আপনার হাইপোক্সিক বা অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের পরিমানও বাড়ে৷ অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম (এআরডিএস) বা তীব্র শ্বাসকষ্টের লক্ষণগুলোর চিকিৎসায়ও প্রোন ভেন্টিলেশন অনেক বড় ভূমিকা রাখে।

দ্বিতীয় উপদেশ
করোনায় আক্রান্ত হলে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।

একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না করোনাভাইরাস যখন ফুসফুসে আক্রমণ করে, তখন ফুসফুসের ডিপেন্ডেন্ট পার্ট বা নিচের অংশ শক্ত হতে থাকে। বায়ুথলিগুলো আর অক্সিজেন বহন করতে পারেনা৷ যেটুকু করতে পারে সেটুকুও ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকে।

শরীরের সংবেদনশীল অংগগুলোকে (ব্রেইন, লিভার, কিডনী) এ সামান্য অক্সিজেনের সাহায্যে টিকে থাকতে হয়। এ অবস্থায় আপনি যদি দুশ্চিন্তা করেন তবে আপনার ব্রেইনের কাজ বাড়তে থাকে৷ ব্রেইনের মেটাবোলিজম অংশে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকায় ব্রেইন বেশি অক্সিজেন ব্যবহার করে ফেলে৷ সেক্ষেত্রে বাকী সংবেদনশীল অংগগুলো মারাত্মক অক্সিজেন সংকটে পড়তে পারে৷

তৃতীয় উপদেশ
করোনায় আক্রান্ত হলে দেহকে ডিহাইড্রেটেড বা পানিশূণ্য করা যাবেনা, মোটেই না৷ প্রচুর তরল ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী স্ট্রোক থেকে শুরু করে যে কোনো অ্যাকিউট ভাস্কুলার ক্রাইসিস বা তীব্র সংবহনতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে পারেন। ফলে পালমোনারি এমবোলিজম থেকে শুরু করে যেকোনো প্রধান সাংবহনতন্ত্রে ব্লক হতে পারে করোনা আক্রান্ত রোগীর৷

আপনার শরীরের পানিশূণ্যতা এ স্ট্রোক লাইক সিম্পটমকে ট্রিগার করতে পারে৷ বিশেষত করোনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে হার্টের প্রধান নালীকে ব্লক করার পেছনে কোষের পানিশূণ্যতা মারাত্মক বাজে ভূমিকা রাখে৷ আপনার শরীর যদি পানিশূণ্য হয় সেক্ষেত্রে হেমোকনসেনট্রেশন হয়৷ প্যাকড সেল ভলিয়ম বা PCV বাড়ে , রক্তের সান্দ্রতা বাড়ে, রক্ত আঠালো হয়ে যায়। এর ফলে স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা বাড়ে৷

আপনি যদি করোনায় আক্রান্ত হন ও এর কারণে যদি আপনার ডায়রিয়া হয় তবে আপনার প্রচুর পরিমানে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। শরীরকে প্রোটিন দিতে হবে৷ নতুবা আপনার স্ট্রোক, হার্ট এটাক, মেজর ভ্যাসেল এম্বোলিজম হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যাবে।

Share.