জ্বর হলে এখন কভিড-১৯-এর পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ আহ্বান জানান অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম।
চলতি মাসে বছরের সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু শনাক্ত রোগী চলতি আগস্ট মাসেই পাওয়া গেছে।’
গত কয়েক দিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এডিশ মশা নিয়ে জরিপ করেছে বলে জানিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘লার্ভার ঘনত্ব অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার মগবাজার, নিউ ইস্কাটন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, নিকুঞ্জ, মিরপুরের দারুস সালাম, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও নিকেতন এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স বেশি পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব পরিমাপের একক ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি হলেই তাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডের ১৯টি এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ৪০-এর বেশি পাওয়া গেছে। দুই সিটি করপোরেশনের ৫৬টি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ২০ বা তার বেশি। আবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসাবো, গোড়ান, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, আর কে মিশন রোড, টিকাটুলি, বনশ্রী, মিন্টো রোড ও বেইলি রোডেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পাওয়া গেছে। আর প্লাস্টিকের ড্রাম, প্লাস্টিকের বালতি, ফুলের টব, পরিত্যক্ত গাড়ির টায়ার ও রঙের কৌটায় এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। প্রতিকারের জন্য তিন দিনের বেশি পানি জমে না থাকা, মশারি ব্যবহার করা এবং শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠদের শরীর-ঢাকা পোশাক পরতে হবে।’
ডেঙ্গুর পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা, নতুন রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু—সবই আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। এ মাসের শেষ সপ্তাহে এসে আগের চেয়ে কম হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে সেটা সবার জন্য স্বস্তিদায়ক হবে।’
জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সংক্রমণ চিত্রের কথা বলতে গিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আগস্টে মোট দুই লাখ ২৯ হাজার ৪৮০ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগের মাসের চেয়ে এটা কিছুটা কম, যা কি না জুলাইয়ে ছিল তিন লাখ ৩৬ হাজারের বেশি।’
কভিড রোগীর বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। আর সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছেন নোয়াখালীতে। সবচেয়ে বেশি রোগী সুস্থও হয়েছেন ঢাকা বিভাগে, এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে ৪১ বছরের ঊর্ধ্বে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি ঢাকা বিভাগে, এরপর চট্টগ্রাম বিভাগ।’ ♦