করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণ বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে ইউরোপসহ সব মহাদেশের দেশকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের অর্থনৈতিক শক্তিধর জার্মানিতে নতুন মহামারি শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। তাই সংক্রমণ রোধে তখন আবারও শাটডাউন ঘোষণা করেছিলেন তিনি, যা আজ থেকে শুরু হল।
৪ এপ্রিল ইস্টার উৎসবের ছুটি সামনে রেখে দেশটিতে পাঁচ দিনের কঠোর শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন ম্যার্কেল। ইস্টারের ছুটিতে জার্মানির নাগরিকদের অপ্রয়োজনে ভ্রমণ ও বিদেশ যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
বার্লিনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যার্কেল বলেন, করোনার নতুন ধরন আরও প্রাণঘাতী। এটি বেশি সংক্রামক।
তাই আজ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত জার্মানির ১৬ রাজ্যে কঠোর শাটডাউন আরোপ করা হয়েছে। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলা বন্ধ থাকবে।
এ সময় সব দোকান বন্ধ রাখা হবে। ইস্টার উপলক্ষে ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনলাইনে প্রচার করা হবে। এর মাঝে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত কেবল গ্রোসারি দোকানগুলো খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
ম্যার্কেল বলেন, পরিস্থিতি খুব গুরুতর। কভিড-১৯ এ সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) কোনো শয্যা ফাঁকা নেই।
মহামারিসংক্রান্ত কঠোর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে গত মাসের মাঝামাঝিতে বিক্ষোভ হয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এর মধ্যে রয়েছে জার্মানির পাশাপাশি রয়েছে নেদারল্যান্ডস, বুলগেরিয়া ও সুইজারল্যান্ড।
এর আগে জার্মানি ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু করে। স্কুল খুলে দেয়া হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে গেছে। ইউরোপে বর্তমানে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ চলছে।
এ পিরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজছে ইউরোপের সব দেশ। আশার কথা শুনিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন। বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি হতে পারে। কোনো অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী যখন একটি সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়, তখনকার পরিস্থিতি বোঝাতে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ পরিভাষা ব্যবহার হয়। সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়া ও টিকা দিয়ে হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছানো যায়।
কমিশনার বলেছেন, ‘একটি প্রতীকী তারিখ বিবেচনা করি চলুন, সেটি হলো ১৪ জুলাই। পুরো অঞ্চলজুড়ে এর মধ্যেই হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করার সম্ভাবনা আমাদের আছে। করোনা মহামারিকে পরাস্ত করার একটি পথই আছে আমাদের হাতে। আর তা হলো, টিকা দেয়া।’
একইসঙ্গে করোনার লাগাম টানতে সামাজিক দূরত্ব, হাত ধোয়া ও মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ♦