গাজা ছেড়ে ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে চলে যাওয়া এবং উপত্যকায় নতুন ইসরায়েলি বসতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে দুই ইসরায়েলি মন্ত্রী সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার নিন্দা জানিয়েছে নেদারল্যান্ডস।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেছে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতি করা অথবা তাদের ভূখণ্ডকে হ্রাস করার যেকোনো ধরনের আহ্বানকে নেদারল্যান্ডস প্রত্যাখ্যান করে।
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের গণহারে বের করে দিতে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইসরায়েলের নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ। তারা ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বের করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইসরায়েলের ফায়ারব্র্যান্ড জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন গভির গাজার বাসিন্দাদের দেশত্যাগে উৎসাহিত করাকে সমাধান হিসেবে দেখছেন বলে জানান। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ বলেছিলেন, যদি গাজায় আরবরা না থাকে, তাহলে ইসরায়েলিরা বলবে, এটি একটি সুন্দর জায়গা, আসুন, মরুভূমিকে প্রস্ফুটিত করি।
এর আগে গত মঙ্গলবার ইসরায়েলি মন্ত্রীদের এমন প্রস্তাবকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের গাজার বাইরে বের করে দিয়ে অন্য কোথাও পুনর্বাসনের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে।
২০০৫ সালে ইসরায়েল একতরফাভাবে গাজা থেকে তাদের সর্বশেষ সেনা এবং বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নেয়। এর মধ্য দিয়ে ১৯৬৭ সাল থেকে তাদের দীর্ঘ অবস্থানের অবসান হয়। তবে সেনা সরিয়ে নিলেও গাজা সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থেকে যায়।
গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজাবাসীদের উচ্ছেদ বা ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের ভূখণ্ডে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে নেতানিয়াহু সরকার কোনো ইঙ্গিত না দিলেও বেন গভির যুক্তি দেখিয়েছেন, ফিলিস্তিনিদের প্রস্থান এবং ইসরায়েলি বসতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা একটি সঠিক, ন্যায়সঙ্গত, নৈতিক এবং মানবিক সমাধান।
গাজার জনসংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ। জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান যুদ্ধে সেখানকার ৮৫ শতাংশ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ♦