পর্ষদ সভার সময় ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স (এনসিসি) ব্যাংক লিমিটেড। ২৬ এপ্রিল বেলা ৩টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে।
সভায় ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। আর এ সভায় বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা আসতে পারে।
ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (এনসিসি)
এনসিসি ব্যাংক ১৯৮৫ সালে ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি হিসেবে যাত্রা করে। শুরুতে এর উদ্দেশ্য ছিল সম্পদ গতিশীলতার মধ্য দিয়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য খাত উন্নত করা। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারে ভূমিকা রাখা।
আশির দশকের মাঝামাঝিতে দেশে প্রতিষ্ঠিত ২টি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কোম্পানির মধ্যে একটি ছিল ন্যাশনাল ক্রেডিট লিমিটেড। ৫০ মিলিয়ন টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে গঠিত এনসিএল ৮ বছর কাজ করার পর বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে এনসিএল-এর দায় ও পরিসম্পদ নিয়ে এনসিসিবিএল গঠন করা হয়।
১৯৯২ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির ১৬টি শাখা ছিল। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে ৩৯ কোটি টাকা পুঁজি নিয়ে ১৯৯৩ সালে একটি ব্যবসায়িক ব্যাংক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
সেই থেকে এনসিসি ব্যাংক গ্রাহকদের কম্পিউটারভিত্তিক সেবা দিয়ে আসছে। ব্যাংকের ব্যক্তিগত ও করপোরেট পর্যায়ের গ্রাহকদের ডিপোজিট এবং ক্রেডিট কর্মসূচিগুলি বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে ব্যাংকটির ১২২টি শাখা রয়েছে।
এনসিসিবিএল প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বহুমুখী বাণিজ্যিক ব্যাংকিং ব্যবসায়ে নিয়োজিত রয়েছে। ব্যাংকটির মূল ব্যাংকিং কার্যক্রমগুলি হচ্ছে আমানত সংগ্রহ, ঋণদান, বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রা ও আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্স সার্ভিসেস। পাশাপাশি ব্যাংকটি গ্রাহক-ভিত্তিক ব্যক্তিগত ব্যাংকিং সেবাদানে তৎপর। ফলে তারা ইতোমধ্যে একটি সমৃদ্ধ গ্রাহকভিত্তি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি স্ব-প্রণীত নীতিমালা অনুসারে ঋণ দিয়ে থাকে। প্রচলিত শিল্পঋণ দান বা অর্থায়ন ও বাণিজ্যিক ঋণ ব্যতীত ব্যাংকটি নানা ধরণের ভোক্তা ঋণ স্কিম চালু করেছে। স্কিমগুলোর মাধ্যমে ব্যাংকটি স্থায়ী আয়ের ব্যক্তিদের মধ্য থেকে একটি গ্রাহকভিত্তি তৈরি করার প্রয়াস চালায়।
এনসিসি ব্যাংক ইজারা অর্থায়ন, প্রকল্প ঋণ, শিল্প ঋণসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্য ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে সিন্ডিকেট ঋণদানেও ব্যাংকটি অংশ নেয়।
১৯৯৩ সালে বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে যাত্রার শুরুতে ব্যাংকটির প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের ৭.৫০ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ৭৫০ মিলিয়ন টাকা অনুমোদিত মূলধন ও ১.৯৫ মিলিয়ন শেয়ারে বিভক্ত ১৯৫ মিলিয়ন টাকা পরিশোধিত মূলধন ছিল।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ২০,০০০ মিলিয়ন টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৯,৪৫৯ মিলিয়ন টাকা।
পরিচালনা পর্ষদ
পরিচালক পর্ষদ ব্যাংকটির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংকটির জন্য ব্যবসায়িক ও কৌশলগত নীতি অনুমোদন করে।
এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান জনাব এস.এম. আবু মহসিন। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি আবু মহসিন চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পগ্রুপ মোজাহের ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম এস.এম. মোজাহেরুল হকের ছেলে তিনি।
জনাব এস.এম. আবু মহসিন কন্টিনেন্টাল ইন্সুরেন্স লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে তিনি সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক। তিনি অ্যালায়েন্স ডিপ সি ফিশিং লিমিটেড, জে এম শিপিং লাইন্স ও ফুড অ্যান্ড অ্যাকোমোডেশন কোং লিমিটেডের চেয়ারম্যান। ব্রাদার্স অক্সিজেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব এস.এম. আবু মহসিন।
ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন জনাব মো. আবুল বাশার।
এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোহাম্মদ মাহমুদুর রশীদ। তিনি তার কাজের জন্য পরিচালক পর্ষদের কাছে জবাবদিহি করেন। এর আগে তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন।
ব্যাংকিংখাতে ৩১ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মাহমুদুর রশীদ দেশ ও দেশের বাইরে নানা অর্থিক প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ♦