শুধু হেঁটেই আপনি কমাতে পারেন সপ্তাহে তিন কেজি পর্যন্ত। কিন্তু তার জন্য মেনে চলতে হবে এই নিয়ম।
দিন-১
২০ মিনিট
প্রথম পাঁচ মিনিট সাধারণ গতিতে হাঁটুন। এবার ১০ মিনিট দ্রুতগতিতে হাঁটুন। আস্তে আস্তে গতি কমিয়ে এনে ৫ মিনিট ধীরেসুস্থে হাঁটুন।
দিন-২
৩০ মিনিট
সাধারণ গতিতে পাঁচ মিনিট হাঁটার মাধ্যমে শুরু করুন। গতি বৃদ্ধি করে ২০ মিনিট দ্রুতগতিতে হাঁটুন। শেষ পাঁচ মিনিটে গতি কমিয়ে আনুন।
দিন-৩
৪০ মিনিট
প্রথম পাঁচ মিনিট ধীরে হেঁটে ওয়ার্মআপ করে নিন। এবার বিরতি দিয়ে ৩০ মিনিট হাঁটুন: প্রতি ৫ মিনিটে একবার ৩০ সেকেন্ডের জন্য গতি বাড়িয়ে দিন, আবার ৩০ সেকেন্ড পর সাধারণ গতিতে হাঁটুন। পেশিতে টান এড়ানোর জন্য পাঁচ মিনিট নিম্ন গতিতে হেঁটে নিন।
দিন-৪
পাঁচ মিনিট
শুরু করুন পাঁচ মিনিটের ওয়ার্মআপ দিয়ে। চেষ্টা করবেন উঁচু কোনো জায়গায় হাঁটার, যাতে হাঁটার ইনটেনসিটি বৃদ্ধি পায় (উঁচু জায়গায় হাঁটার সুযোগ না থাকলে, পিঠে ভারী ব্যাগ ঝুলিয়ে নিতে পারেন। এই অতিরিক্ত ওজনও হাঁটার ইনটেনসিটি বাড়াতে সাহায্য করবে। শেষ পাঁচ মিনিটে গতি কমিয়ে আনুন।
দিন-৫
৫০ মিনিট
ওয়ার্মআপ করার জন্য পাঁচ মিনিট ধীরগতিতে হাঁটুন। এবার ধীরে ধীরে গতি বাড়ান। এই ৪০ মিনিটের মধ্যে ৩০ সেকেন্ড দ্রুতগতিতে হাঁটবেন, আবার ৬০ সেকেন্ড সাধারণ গতিতে হাঁটবেন। চেষ্টা করুন যতটুকু সময় সম্ভব, এই পদ্ধতিতে হাঁটার। শেষে গতি কমিয়ে এনে পাঁচ মিনিট নিম্ন গতিতে ধীরেসুস্থে হাঁটুন।
দিন-৬
৬০ মিনিট
১০ মিনিট আস্তে হেঁটে শরীরকে প্রস্তুত করে নিন। ৫০ মিনিট দ্রুতগতিতে হাঁটুন, তবে চেষ্টা করবেন অন্যান্য দিনের তুলনায় দ্রুতগতিতে হাঁটার (চাইলে দ্রুত বিটের গান শুনতে পারেন সাথে সাথে, তা গতি ধরে রাখতে সাহায্য করবে)। পাঁচ মিনিট আস্তে হেঁটে গতি কমিয়ে আনুন।
দিন-৭
৬০ মিনিট
ওয়ার্মআপ: পাঁচ মিনিট ধীরে হাঁটুন। এবার এক মিনিট দ্রুত গতিতে হেঁটে পরবর্তী তিন মিনিট সাধারণ গতিতে হাঁটুন। এই চার মিনিটের সাইকেল যতক্ষণ সম্ভব চালিয়ে যান পরবর্তী ৫০ মিনিটের জন্য। পাঁচ মিনিট আস্তে হাঁটার মাধ্যমে হাঁটা শেষ করুন।
শারীরিক দক্ষতা তৈরি হওয়ার পর আস্তে আস্তে অন্যান্য শরীরচর্চার অভ্যাসও তৈরি করতে পারেন। তবে খাবারদাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। চেষ্টা করুন উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়ার। অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং খাবারে প্রোটিন ও শাকসবজির পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। খাবার খাওয়ার সময় ক্যালরির বিষয়টি মাথায় থাকলে ওজন কমানো অনেক সহজ হয়ে আসবে।
ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি ব্যাপার হচ্ছে, শরীরে ক্যালরির ঘাটতি তৈরি করা। অর্থাৎ আপনি যে পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করছেন, তার চেয়ে বেশি আপনার ব্যয় করতে হবে। এর দুটি উপায় রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, আপনার সাধারণ জৈবিক কার্যকলাপের জন্য যতটুকু ক্যালরি গ্রহণ করা প্রয়োজন, তার চেয়ে কম ক্যালরি গ্রহণ করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, প্রয়োজনমতো ক্যালরি গ্রহণ করার পর শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালরি ব্যয় করে দেহে ক্যালরির ঘাটতি তৈরি করা।
এই দুটি উপায়ের মধ্যে দ্বিতীয় উপায়টি তুলনামূলক বেশি স্বাস্থ্যকর। তবে, শরীরচর্চার বিষয়ে অনেকে অনাগ্রহ দেখান। এর অন্যতম দুটি কারণ হলো, সব ধরনের শরীরচর্চা করার মতো অনেকেরই শারীরিক দক্ষতা নেই, আবার অনেকেই জিমে গিয়ে বাড়তি খরচ করতে চান না। কিন্তু এর একটি সহজ সমাধানও রয়েছে, তা হচ্ছে হাঁটা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, অ্যারোবিকসের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে হাঁটা। আপনি ঘরে ট্রেডমিলেও হাঁটতে পারেন কিংবা বাইরে গিয়ে হেঁটে আসতে পারেন। এতে কোনো ধরনের আর্থিক বিনিয়োগেরও প্রয়োজন নেই। তাই ওজন কমাতে হাঁটার কোনো জুড়ি নেই।
যারা কোনো কঠিন কোনো শরীরচর্চা করতে চান না, তাঁরা প্রতিদিন ২০০ থেকে ৪০০ ক্যালরির ঘাটতি তৈরি করতে পারেন শুধু হেঁটে। এ জন্য দরকার একটি সুপরিকল্পিতভাবে তৈরি ওয়াকিং প্ল্যান। প্রথম দিকে অল্প গতিতে হাঁটা শুরু করে, ক্রমান্বয়ে দ্রুতগতিতে ও বেশি সময় নিয়ে হাঁটতে পারেন। প্রতিদিন ২০০-৪০০ ক্যালরি খরচ করার জন্য সাত দিনের একটি ওয়াকিং প্ল্যান তৈরি করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিমিত ও সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি এই উপায়ে হাঁটলে এক সপ্তাহে ব্যক্তিভেদে ১-৩ পাউন্ড ওজন কমানো সম্ভব বলে ধারণা করা হচ্ছে। ♦