বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ই-কমার্সভিত্তিক মার্কেটপ্লেস ইভ্যালির ক্যাশ অন ডেলিভারি (সিওডি) পদ্ধতিতে আস্থা রাখছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। চলমান পরিস্থিতে সিওডি পদ্ধতিতে পণ্য কেনাবেচার সুযোগ করে দেওয়ায় আবারও স্বাভাবিক হচ্ছে ইভ্যালির কার্যক্রম।
শনিবার (২৯ আগস্ট) থেকে ‘‘ফ্রেন্ডস ডিল” ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সিওডি পদ্ধতিতে পণ্য বিক্রি শুরু করে ইভ্যালি।
নতুন এ পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত যুক্ত হয়েছেন দেড় হাজার বিক্রেতা। নানা ধরনের ফুড রেস্টুরেন্ট, ফ্যাশন আইটেম ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, স্মার্ট ফোন ও লাইফস্টাইল পণ্যসহ নানা ক্যাটাগরির পণ্য নিয়ে ফ্রেন্ডস ডিলে অংশ নিচ্ছেন বিক্রেতারা। এক সপ্তাহের মধ্যে বিক্রেতার সংখ্যা পাঁচ হাজারে উন্নীত হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
বিক্রেতাদের পাশাপাশি ক্রেতাদের পক্ষ থেকেও দারুণ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল। এ বিষয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, যেহেতু আমাদের ব্যাংক হিসাব ও পেমেন্ট গেটওয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে সেহেতু গ্রাহক ও বিক্রেতাদের সুবিধার জন্য আমরা ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্বতিতে পণ্য বিক্রি শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫০৩ শপ লাইভ রয়েছে। এদের মধ্যে রেগুলার শপ ৬৮০, এক্সপ্রেস শপ ৬২০ ও ফুড শপ ২৩০। এ ছাড়া ফ্রেন্ডস ডিলে রয়েছে ১২৫ শপ। ক্যাশ অন ডেলিভারির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বিক্রেতারা সরাসরি তাদের পেমেন্ট পাচ্ছেন। অন্যদিকে গ্রাহকরাও পণ্য বুঝে নিয়েই মূল্য পরিশোধ করছেন। ফলে গ্রাহকদের পণ্য বুঝে নেয়ার সময় সংক্রান্ত অভিযোগের সমাধান হলো।
ইভ্যালির বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, যেহেতু সরকারি সংস্থা ও বিজনেস ট্রেড বডি অনুসন্ধান করছে, আমরা তাদেরকে পূর্ণ সহায়তা করে যাব। আমাদের বিশ্বাস, আমরা অনৈতিক ও অবৈধ কিছু করিনি। আর সে বিষয়টিই তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এর বাইরেও আমাদের ডেলিভারি, রিফান্ড বা সেলারের পেমেন্ট নিয়ে যে ইস্যুগুলো উঠে এসেছে, সেগুলোও আমরা দ্রুত সমাধানে নিরলস কাজ করছি। একই সঙ্গে আমরা গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, যাদের আগের অর্ডারের পণ্য ডেলিভারি দেওয়া বাকি আছে সেগুলোও আমরা দ্রুত সরবরাহের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু এ বিষয়টির সঙ্গে বিক্রেতাদের পেমেন্টের একটি বিষয় জড়িত সেহেতু আমরা সরকারের কাছে আবেদন করব, আমাদের ব্যবসায়িক যে ব্যাংক হিসাবগুলো আছে সেগুলো যেন অন্তত দ্রুত চালু করে দেওয়া হয়।
ইভ্যালি প্ল্যাটফর্মে নানা ধরনের গেজেটস আইটেম বিক্রি করে প্রোডাক্টস হাব নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম রায়হান বলেন, রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে আমাদের ফিজিক্যাল শপ রয়েছে- গ্যাজেটস রুট বিডি। এরই সহযোগী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রোডাক্টস হাব। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে আমরা ইভ্যালির সঙ্গে ব্যবসা করছি। আমাদের নিজস্ব বিক্রির সঙ্গে ইভ্যালির মাধ্যমে বিক্রি হওয়া পণ্যের তুলনা করলে আমাদের প্রায় অর্ধেক সেল হয় ইভ্যালি থেকে। ইভ্যালি একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এটা ঠিক। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এত কম সময়ে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্যিই দারুণ একটি পদক্ষেপ। এর ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষই লাভবান হলো। একজন সেলার হিসেবে ইভ্যালির প্রতি ও এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রাসেলের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। ক্রেতার পণ্য পাওয়া ও বিক্রেতার পেমেন্ট পাওয়া- এ দুই বিষয়ে ইভ্যালি আরও যত্নবান হলে প্রতিষ্ঠানটি একদিন সত্যিই বাংলাদেশের আমাজন হবে।
ইভ্যালিতে কেনাকাটা করেছেন এমন একজন ক্রেতা নূরে আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা সম্পন্ন করার পর একটি চাকরিতে যোগ দিই। ১২৫ সিসির একটি বাইক কেনার জন্য টাকা জমাচ্ছিলাম। ইভ্যালির কারণে সেই টাকা দিয়েই ১৫০ সিসির বাইক কিনতে পেরেছি। ইভ্যালির প্রতি আমারও রাগ আছে। কারন ডেলিভারির টাইম নেয় অনেক। তবে ইভ্যালির মতো ই-কমার্সের জন্যই অনেক মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ♦